ডেমড়া গণহত্যা দিবস আজ

প্রকাশ : ১৪ মে ২০১৭, ১৩:৪২

জাগরণীয়া ডেস্ক

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আজকের এই দিনে দেশের উত্তরাঞ্চলের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল পাবনা জেলার সাঁথিয়া ও ফরিদপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা ডেমড়ায়।

১৯৭১ সালের এই দিনে সহস্রাধিক মুসলমান-হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত সাধারণ গ্রামাবাসী, আশ্রয় নেয়া মানুষ ও মুক্তিকামীদের নির্বিচারে হত্যা করে এদেশীয় রাজাকার, আলবদরসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, এলাকাটি নিরাপদ ভেবে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে হিন্দু মুসলমান ধনাঢ্য ব্যবসায়ীরা এ গ্রামে আশ্রয় নেয়। তৎকালীন আলবদর, আল শামস প্রধান মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় এবং তারই নির্দেশে স্থানীয় দোসর আসাদ রাজাকারের নেতৃত্বে এ গ্রামে ২শ ৫০ জন ধনাঢ্য হিন্দু ব্যবসায়ীসহ প্রায় সহস্রাধিক মুক্তিকামী যোদ্ধা এবং স্থানীয় গ্রামবাসীকে নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। সেইসঙ্গে তারা এ এলাকায় ব্যাপক লুটতরাজ ও নারী ধর্ষণ করে।

ফরিদপুরের মুক্তিযোদ্ধা সেলিম মোর্শেদ জানান, উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহৎ গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ ডেমড়া গ্রামে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঝোঁপ আর জঙ্গলে পরিপূর্ণ হয় এই বৃহৎ গণকবরটি।

তবে স্থানীয়দের দাবি, উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যার এই স্থানটি আগামি প্রজন্মের কাছে ইতিহাস হিসেবে তুলে ধরতে আরও বড়সড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। তাহলে আগামি প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারবে। ২শ ৫০ জন হিন্দুকে সারিবদ্ধভাবে মাটিচাপা দেয়া হয় এই গণকবরে। অনুরূপভাবে বাকি মুসলমানদের লাশগুলোও সারিবদ্ধভাবে দাফন করা হয়। এই ইট সিমেন্টের কাজের আগে অর্থাৎ ৩৮ বছর ডেমড়ার এ গণকবরটি ছিল অন্ধকারে। তখন প্রতি বছরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় দিবসগুলো আসলে স্থানীয় জনগণ কলার গাছ দিয়ে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করে গণকবরে শায়িত শহীদদের স্মরণ করতেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত