মেয়ের লাশ দেখে বাবার আত্মহত্যা
প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০১৭, ১৯:২৪
শোবার ঘরে ফ্যানের সঙ্গে মেয়ে মঞ্জুলার ঝুলন্ত লাশ দেখে চলন্ত ট্রেনের নিচে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বাবা। গত ২৯ জুন (বৃহস্পতিবার) সকালে ভারতের মুম্বাইয়ের ভিরার এলাকায় বাবা-মেয়ের আত্মহত্যার মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে।
হতভাগ্য ওই বাবার নাম মুথুকৃষ্ণান নাইডু। ছত্রপতি শিবাজি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে খাদ্য সরবরাহের কাজ করতেন মুথুকৃষ্ণান। থাকেন ভিরার এলাকায় ভূমিকুঞ্জ ভবনে।
মঞ্জুলার ভাই জানকিরমন টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানান, ২০১২ সালে চেন্নাইয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মঞ্জুলার। মাত্র ১০ দিনের মাথায় তাদের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে অশান্তির কারণে বিয়ের দুই মাস পরেই মঞ্জুলা শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন। চার মাস আগে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর হয়। ২৬ বছর বয়সী বোনকে আবার বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন বাবা।
জানকিরমনের ভাষ্য, বিচ্ছেদ হওয়ার পরেও মঞ্জুলা তার স্বামীকে ভুলতে পারেননি। তার সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলেন। তিন মাস আগে মঞ্জুলার সাবেক স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। তখন থেকেই তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
দ্বিতীয়বার বিয়ে নিয়ে গত ২৮ জুন বাবা মুথুকৃষ্ণানের সঙ্গে মঞ্জুলার বাগ্বিতণ্ডা হয়। মঞ্জুলার তখন জ্বর ছিল। বাগ্বিতণ্ডার পর মঞ্জুলা ওষুধ খেয়ে শোবার ঘরে চলে যান। রাতের খাবার খাওয়ার জন্য মুথুকৃষ্ণান মঞ্জুলাকে ডাকলেও মঞ্জুলা দরজা খোলেননি।
পরদিন সকালেও দরজা খোলেননি মঞ্জুলা। ভাই জানকিরমন দরজা ভেঙে ফেলেন। এরপর বোনকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। মঞ্জুলা আত্মহত্যার কোনো চিঠি লিখে যাননি। মুথুকৃষ্ণান মঞ্জুলার নিথর দেহ দেখে কোনো কথা বলেননি। ভাই জানকিরমন মঞ্জুলাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে ছুটে যান। চিকিৎসক মঞ্জুলাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর জানকিরমন ভিরার থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন।
জানকিরমন বলেন, মঞ্জুলার বিয়ে ভেঙে যাওয়ার জন্য বাবা সব সময় নিজেকেই দায়ী করতেন। মঞ্জুলার মৃত্যুর পর নিজেকেই বারবার দোষারোপ করছিলেন বাবা। তিনি মাকে বলছিলেন, জীবন শেষ করে দিতে চান। এরপরই ট্রেনের সামনে লাফ দেন। তার অসুস্থ মা স্বামীকে সে সময় ঘর থেকে বের হতে বাধা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও অসুস্থ। তাই শেষরক্ষা আর হয়নি।