কাতারের নিন্দায় ট্রাম্প, সঙ্কট সমাধানের আশা টিলারসনের

প্রকাশ | ১৩ জুন ২০১৭, ০১:১৬

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সন্ত্রাসের ‘শীর্ষ পর্যায়ের’ মদতদাতা হিসেবে কাতারকে অভিযুক্ত করেছেন, অপরদিকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা টিলারসন সব পক্ষ মিলে কাতার সঙ্কটের সমাধান করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

৯ জুন (শুক্রবার) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাতার অনেকদিন ধরেই সন্ত্রাসবাদের শীর্ষ পর্যায়ের মদতদাতা। তাই চূড়ান্তভাবে আমরা একটি কঠিন কিন্তু দরকারি পদক্ষেপ নেব না ওই সহজ রাস্তায় হাঁটব, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের। সন্ত্রাসবাদকে তহবিল যোগানো বন্ধ করতে হবে আমাদের। তহবিল যোগানো বন্ধ করতে কাতারকে বলার সময় এসে গেছে, এই আমার সিদ্ধান্ত।”

সৌদি আরবের রিয়াদে তার সম্প্রতিক সফরের সময় এক সম্মেলনে আরব নেতাদের সঙ্গে নিয়ে কাতারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনাটি গ্রহণে তিনি সহায়তা করেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান ট্রাম্প।

অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এক ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তা গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন, তারা কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করতে যাচ্ছে, গত মাসে রিয়াদে ট্রাম্পের সফরের সময় সৌদি আরব ও আরব আমিরাত এ ধরনের কোনো ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রকে দেয়নি।

এই সঙ্কট যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের একটি কূটনৈতিক পরীক্ষা, কারণ দেশটি একই সঙ্গে কাতার ও এর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদকারী আরব রাষ্ট্রগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্র।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাতারের ওপর আরব রাষ্ট্রগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমণ করার চেষ্টা করছে, কিন্তু ট্রাম্পের এ অভিযোগ ও মন্তব্যে সেই প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্থ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই সঙ্কটের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। এতে বোঝা যাচ্ছে না, যুক্তরাষ্ট্র কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করবে না কাতারকে অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় টেবিলে নিয়ে বসাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, সব পক্ষ মিলে এ সঙ্কটের একটি সমাধান বের করবে বলে আশা করছেন তিনি।

ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশরকে কাতারের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ সহজ করার আহ্বান জানিয়েছি আমরা।”

শুক্রবার কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদকারী আরব দেশগুলো কাতারের কয়েক ডজন ব্যক্তি ও কোম্পানির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে তাদের কালোতালিকাভুক্ত করেছে, এতে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে। 

এ পরিস্থিতিতে মিত্র তুরস্ক কাতারের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে দেশটিতে সেনা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।

পেন্টাগন জানিয়েছে, কাতারের সঙ্গে সাতটি আরব রাষ্ট্রের সম্পর্কচ্ছেদে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ মেয়াদি অভিযানের সামর্থ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

কাতারের আল উদেইদ বিমান ক্ষেত্র মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর সবচেয়ে বড় ঘাঁটি। এই ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র বাহিনীগুলোর ১১ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন আছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই ঘাঁটিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।