ত্রিপুরায় আদিবাসীদের গড়িয়া উৎসব
প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০১৭, ০৫:৩১
পহেলা বৈশাখ থেকে ৭ বৈশাখ পর্যন্ত ত্রিপুরায় আদিবাসীরা পালন করে গড়িয়া উৎসব। হিন্দু দেবতা দূর্গাপুত্র গণেশকে সনাতন আদিবাসীরা গড়িয়া রূপে পূজা করেন।
প্রতিবছর বৈশাখ মাসের প্রথম দিন থেকে গড়িয়া দেবতাকে নিয়ে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ঘোরেন একদল লোক। গড়িয়া দেবতা বাড়িতে আসছেন দেখে বাড়ির নারীরা উঠানে পানি ছিটিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে একটি পিঁড়ি বসান। গড়িয়া মূর্তিকে এ পিঁড়িতে বাসনো হয়। পরিবারের কর্তা, গৃহিণীসহ সব সদস্য ধূপ দেখিয়ে বরণ করে প্রণাম করেন। একই সঙ্গে চালসহ অন্য ফসল ও নগদ রুপি চাঁদা হিসেবে দেন।
দেবতাকে উঠানে পিঁড়িতে বসানোর পরিক্রমার সঙ্গে আসা নারী-পুরুষ বাবা গাড়িয়াকে ঘিরে গান করতে করতে নৃত্য করেন। একই ভাবে পহেলা বৈশাখ থেকে ৭ বৈশাখ পর্যন্ত এভাবে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে পরিক্রমা করা হয়।
বৈশাখ মাসের সপ্তম দিনে হয় গড়িয়া পূজা। এদিন গ্রাম ঘুরে যে চাঁদা সংগৃহীত হয় তা দিয়ে পূজার আয়োজন করা হয়। হিন্দুদের অন্য সব মূর্তি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। গড়িয়া মূর্তি তৈরি হয় বাঁশ, আদিবাসীদের হস্ততাঁতে তৈরি কাপড় ও জুমের চাল দিয়ে।
গড়িয়া পূজার জায়গাও তৈরি করা হয় বাঁশ দিয়ে। পূজার দিন মোরগ, কবুতর ও পাঠা বলি দেওয়া হয়। আবার কেউ কেউ কবুতর বলি না দিয়ে গড়িয়ার কাছে উৎসর্গ করে ছেড়ে দেন।
মূলত গ্রামের মানুষের মঙ্গল কামনা করে ও জুমে অধিক ফসল ফলনের প্রার্থনার আশায় গড়িয়া দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে যুগ যুগ ধরে ত্রিপুরার সনাতন আদিবাসীরা এ পূজার আয়োজন করে আসছেন।