গায়ে আগুন দিয়ে যৌনদাসী চুক্তির প্রতিবাদ
প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১৪:১২
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের জাপান দূতাবাসের সামনে থাকা এক কিশোরীর ভাস্কর্য (যেটি ‘কমফোর্ট ওমেন' এর আদলে তৈরি) অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার বদৌলতে জাপানের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার করা যৌনদাসী চুক্তির বিরুদ্ধে গায়ে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশটির একজন বৌদ্ধভিক্ষু।
বিবিসি’র খবরে বলা হয়, শনিবার দুর্নীতির দায়ে অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাইকে দ্রুত অপসারণের দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের মধ্যে ওই ব্যক্তি নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া যৌনদাসী চুক্তি নিয়ে দেশদ্রোহের অভিযোগ তুলে কর্তৃপক্ষের কাছে পাকর্কে গ্রেপ্তারেরও দাবি জানান তিনি।
এদিকে দেশটির কর্মকর্তারা জানান, ৬৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির শরীর মারাত্মক ভাবে (থার্ড-ডিগ্রি বার্ন) পুড়ে গেছে। সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
ওই বৌদ্ধভিক্ষু আত্মহননের চেষ্টার আগে প্রেসিডেন্ট পার্ককে গ্রেপ্তার করার জন্য একটি চিরকুট লিখে যান বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি সেনাদের কাছে নিপীড়িত হয়ে কোরিয়ার অনেক নারী জাপানি সেনাদের যৌনদাসী হতে বাধ্য হন। ২০১৫ সালে ক্ষতিগ্রস্ত ওই নারীদের জন্য জাপানের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষতিপূরণ চুক্তি হয়।
কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, যুদ্ধের সময় জাপানের সেনারা দক্ষিণ কোরিয়ার নারীদের উপর যে নির্যাতন করেছে; এ চুক্তি তার দায় স্বীকার করার জন্য যথেষ্ট নয়।
স্বাক্ষরিত যৌনদাসীদের জন্য সহায়তা চুক্তি অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত ওইসব নারীর জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার গঠিত তহবিলে ১শ’ কোটি ইয়েন (৮৩ লাখ ডলার) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা রয়েছে জাপানের। বিনিময়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে রাজধানী সিউলের জাপান দূতাবাসের সামনে থাকা এক কিশোরীর ভাস্কর্য (যেটি ‘কমফোর্ট ওমেন' এর আদলে তৈরি) অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে, যেখানে ১৯৯২ সাল থেকে প্রতি বছরই যৌনদাসীদের সঙ্গে কোরিয়ার সাধারণ মানুষ ভাস্কর্যটিকে ঘিরে বিক্ষোভ করে আসছে।
২০১৫ সালের চুক্তির পর ‘কমফোর্ট ওমেন’ ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়া হলেও সম্প্রতি তা পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক টানাপড়েনের মধ্যে শুক্রবার সিউল থেকে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়াসুমাসা নাগামিনসহ দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে সরিয়ে নিয়েছে টোকিও। ভাস্কর্যটির পুনঃস্থাপন ২০১৫ সালের চুক্তির লঙ্ঘন বলে দাবি করছে জাপান।