‘আইএসআইএস, আমি তোমার গলা কেটে দেব’
প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৩:০৬ | আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৫:০৪
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর মার্কিন মুলুকে জাতিবিদ্বেষী নিগ্রহের ঘটনা ঘটছে। হিজাব-পরিহিত মহিলাদের ওপর একাধিক আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এই তালিকায় নয়া সংযোজন এক মহিলা পুলিশ অফিসার। সেই সময় তিনি কর্তব্যরত ছিলেন না। হিজাব পরিহিত ওই পুলিশ কর্মীকে ‘আইএসআইএস’ তকমা দিয়ে আমেরিকা ছাড়ার হুমকি দিল এক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি। সে ওই পুলিশ কর্মীর ১৬ বছরের ছেলেকে ধাক্কাও মারে।
ওই মহিলা পুলিশ অফিসার নিউইয়র্কের বাসিন্দা অ্যামল এলসোকারি হিজাব পরে তার ছেলেকে ব্রুকলিনে দিতে এসেছিলেন। গাড়ি পার্ক করে তিনি ফিরে এসে দেখেন, তাঁর ছেলেকে ধাক্কা মারছে বছর ৩০-এর এক শ্বেতাঙ্গ দুষ্কৃতী। এলসোকারি বাধা দিতে এগিয়ে এলে ওই দুষ্কৃতী গালিগালাজ দিতে শুরু করে। সে বলে, ‘আইএসআইএস, আমি তোমার গলা কেটে দেব, তোমার দেশে চলে যাও’। এরপর দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়।
ঘটনার সময় এলসোকারি নিজের পরিচয় দেননি। তাঁর কাছে অস্ত্রও ছিল না। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে পাকড়াও করার চেষ্টা চলছে। নিউইয়র্ক পুলিশের বিদ্বেষমূলক অপরাধ দমন সংক্রান্ত বিভাগ গত শনিবারের ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
কর্তব্যের সময়ও এলসোকারি হিজাব পরেন। ২০১৪-র এপ্রিলে এক বৃদ্ধ ও শিশুকে বাঁচাতে একটি জ্বলন্ত বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। তার এই সাহসিকতার জন্য নিউইয়র্কের মেয়র তাঁকে ‘হিরো’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
২০১৪-র এক নৈশভোজে মেয়র বলেছিলেন, এলসোকারি ৯/১১-এর পর পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন যে, ওই নারকীয় জঙ্গি হামলার ঘটনা ইসলামের শিক্ষার পরিপন্থী।
সাহসিকতার জন্য পাঁচ সন্তানের জননী এলসোকারি মেডেলও পেয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আমেরিকায় হিজাব-পরিহিত মহিলাদের ওপর হামলা ও নিগ্রহের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবারই সাবওয়ে ট্রেনে ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প’ ধ্বনি দিতে দিতে তিন মত্ত শ্বেতাঙ্গ এক মুসলিম ছাত্রীর হিজাব টেনে খুলে দেয় এবং ইসলাম-বিরোধী মন্তব্য করে। চলতি মাসের গোড়াতে সিয়াটেলে ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন ক্যাম্পাসে এক মুসলিম ছাত্রীর মুখে প্রকাশ্য দিবালোকে কাচের বোতল দিয়ে আঘাত করা হয়। মিনেসোটার একটি স্কুলেও সহপাঠীরা এক মুসলিম ছাত্রীর হিজাব টেনে ছিঁড়ে চুলের মুঠি ধরে টেনেছিল বলে অভিযোগ।
সূত্র : এবিপি