রোহিঙ্গাবাহী নৌকায় বিজিপি’র গুলি
প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৪৪ | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৩:২২
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর রক্তাক্ত দমন-নিপীড়নে প্রতিদিনই মারা পড়ছে নিরীহ মানুষ। সেদেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশের নির্যাতনের মুখে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে ছুটে আসছে হাজারো রোহিঙ্গা। তবে দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়েও রেহাই পাচ্ছে না এ মানুষগুলো।
নাফ নদী দিয়ে নৌকায় করে পালাতে থাকা রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকায় গত বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাতে গুলি চালায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। এতে গুলিবিদ্ধ হন অনেকের মধ্যে নারী-শিশুও রয়েছেন। এ ঘটনার সর্বশেষ হতাহতের বিষয় জানা যায়নি।
৪২ জন রোহিঙ্গা বহনকারী ওই নৌকায় বিজিপি'র গুলিতে আহত একজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় নাফ নদীর পানিতে ভাসতে দেখে বাংলাদেশের জেলেরা উদ্ধার করে টেকনাফে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে আসে। বুধবার রাতে নৌকাযোগে দুই ছেলেকে নিয়ে পালানোর সময় সে গুলিবিদ্ধ হয়। তার দুই ছেলের কোন হদিশ মেলেনি।
জানা যায়, বিজিপি তাদের সীমান্তের কাছে নাফ নদী সংলগ্ন জাঙ্গালা খাল এলাকায় রোহিঙ্গা ভর্তি নৌকা আটকে যাত্রীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। রাত ৮টার সময় গুলি করার পর বিজিপি তাদের স্পিডবোর্ডের সঙ্গে বেঁধে নৌকাটি নদীতে টেনে নিয়ে যায়। এ সময় নৌকা ছিদ্র হয়ে পানি উঠতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ওই নৌকার যাত্রীদের ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা কেউ জানে না। তবে এখনও দুই সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশা ছাড়েননি উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গা ইমান হোসেন।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের টহল টিম এপার থেকেই একযোগে অনেকের কান্নার আওয়াজ শুনেছে। কিন্তু কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে নির্যাতন করে একটি এলাকা থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের তাড়ানোর পর নতুন করে আরেক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দু'দিন আগে নতুন করে রাখাইন রাজ্যের বুচিডং থানার বিভিন্ন বাড়িঘরে হামলা শুরু করেছে তারা।
এর আগে মংডু থানার অন্তত ১৫টি গ্রাম আক্রান্ত হয়। সেসব গ্রাম এখন বিরাণভূমি।