‘রোহিঙ্গাদের হাজারের বেশি ঘর জ্বালিয়ে ছারখার’
প্রকাশ | ২২ নভেম্বর ২০১৬, ১২:১৬
মিয়ানমার সরকার নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে এলেও রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের হাজারের বেশি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার ‘প্রমাণ’ হাজির করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ১২শ’র বেশি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
গত বছরের ১০ থেকে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ৮২০টি ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ হিসেবে ওই সময়ের আগের ও পরের স্যাটেলাইট ছবি মানবাধিকার সংগঠনটি দেখিয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
তবে মিয়ানমার সরকারের দাবি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণে রোহিঙ্গা মুসলিমরা নিজেরাই নিজেদের ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। এদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রকৃত ঘটনার উপর রঙ ছড়াচ্ছে বলেও দাবি করেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জাও তাই।
মিয়ানমারে জাতিগত বিদ্বেষের শিকার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইনে সম্প্রতি অভিযান শুরু করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ হামলায় নয় সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর থেকে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোতে শুরু হয় সেনা অভিযান।
এরপর সহিংসতায় ৮৬ জনের মৃত্যুর খবর স্বীকার করেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে ৬৯ জনকে সন্দেহভাজন বিচ্ছিন্নতাবাদী বলেছে তারা। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নিহতের সংখ্যা আরও বেশি।
রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি আসলে কী, সেটা স্বাধীনভাবে যাচাইয়ের সুযোগ ঘটছে না। কারণ ওই এলাকায় বিদেশি সাংবাদিকদের নিষিদ্ধ করেছে মিয়ানমার সরকার।
দমন-পীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের অনেকে পালাতে বাংলাদেশ সীমান্তে ভিড় জমাচ্ছেন। মিয়ানমার সরকার তা অস্বীকার করলেও গত কয়েক দিনে শতাধিক রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী।
তিন দশক ধরে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহনকারী বাংলাদেশ সরকার নতুন করে শরণার্থী নিতে নারাজ। বারবার আহ্বান সত্ত্বেও আগের শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার কোনো উদ্যোগও নিচ্ছে না মিয়ানমার সরকার।
এবিষয়ে সোমবার(২১ নভেম্বর) ঢাকায় এক মানববন্ধন থেকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।