ধর্ষণ শেষে হত্যা, সেলফি তুলে ফেসবুকে
প্রকাশ | ১৫ অক্টোবর ২০১৬, ০০:০৫
ভারতের সুগন্ধি বিশেষজ্ঞ মনিকা ঘুর্দেকে (৩৪) তারই বাসার নৃসংশভাবে হত্যা করেছেন মনিকারই নিরাপত্তারক্ষী রাজকুমার সিংহ। প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে হত্যার আগে তাকে পর্ন দেখিয়ে ধর্ষণও করেন।
শুধু তাই নয়, নগ্ন মৃতদেহসহ সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন তিনি।
সেলফির সূত্র ধরে চিহ্নিত রাজকুমারকে রবিবার (৯ অক্টোবর) ব্যাঙ্গালুরু থেকে গ্রেপ্তার করে পাঞ্জাবের গোয়া পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) গোয়ার ‘স্বপ্না রাজ ভ্যালি’র নিজ ফ্ল্যাটের খাটের ওপর থেকে মনিকার দুই হাত বাঁধা নগ্ন মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তৎক্ষণাৎ বলা হয়েছিল, ডাকাতি করতে এসে তাকে ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়েছে।
তবে এ হত্যার ঘটনায় রবিবার ব্যাঙ্গালুরু থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ওই বাসার সাবেক নিরাপত্তারক্ষী রাজকুমার সিংহকে।
পুলিশ হেফাজতে থাকা রাজকুমার হত্যার কথা স্বীকার করে পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন ।
পুলিশ জানায়, পাঞ্জাবের ভাটিন্ডার বাসিন্দা রাজকুমার ওই আবাসনে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। কিন্তু মনিকাসহ আবাসনের আরও অনেক বাসিন্দা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
মনিকার হারানো ছাতা উদ্ধার হয়েছিল রাজকুমারের কাছ থেকে। তাই মনিকা রাজকুমারের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগও জানিয়েছিলেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ জুলাই তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
এমনকি দু'মাসের বেতন পাননি বলেও দাবি করেছেন রাজকুমার। সেই ক্ষোভ থেকেই ধর্ষণ করে মনিকাকে খুন করেন তিনি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাজকুমার জানান, ৩ অক্টোবর (সোমবার) তিনি মনিকার বাসায় যান। এরপর তিন দিন দু'রাত ওই বাসার ছাদে লুকিয়ে থাকেন।
রাজকুমার জানতেন, মনিকা ফ্ল্যাটে একাই থাকেন। কিন্তু তিনি বাড়িতে আছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে পারছিলেন না রাজকুমার। পরে মনিকার গাড়ি দেখতে পাওয়ার পরেই ৫ অক্টোবর ( বুধবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজকুমার নিচে নেমে এসে মনিকার ফ্ল্যাটের বেল বাজায়।
'আই হোল' দিয়ে রাজকুমারকে দেখে দরজা খুলে দেন মনিকা। দরজা খুলতেই ছুরি হাতে ঢুকে পড়েন রাজকুমার। এক পর্যায়ে মনিকা চিৎকার করতে গেলে হাত দিয়ে তার মুখ চেপে ধরে শৌচাগারে নিয়ে যায়। সে সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মনিকা।
এরপর তাকে খাটে শুইয়ে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে। জ্ঞান ফিরতেই মনিকার কাছ থেকে টাকা দাবি করে রাজকুমার। মনিকা ব্যাগ থেকে নিয়ে নিতে বলেন।
ব্যাগ থেকে চার হাজার টাকা নেওয়ার পরেও রাজকুমার আরও টাকা দাবি করতে থাকে। মনিকা রাজকুমারকে তার এটিএম কার্ডটি নিয়ে নিতে বলেন। জানিয়ে দেন কার্ডের পিনও, পরে মনিকার মোবাইলও নিয়ে নেয়। জোর করে জেনে নেয় মোবাইলের পাসওয়ার্ড।
মনিকাকে মোবাইলে তিনটি পর্ন ক্লিপ দেখতে বাধ্য করে রাজকুমার। পরে তার পা দু’টি খুলে দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে রাজকুমার। ধর্ষণের পরে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মনিকাকে হত্যা করে। এরপর ৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ৩টায় রাজকুমার মনিকার ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান। রাতেই উদ্ধার হয় মনিকার লাশ।