বাংলাদেশি তরুণীকে গণধর্ষণ; ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ ভারতীয় আদালতের
প্রকাশ | ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:১৪
পার্লারে কাজ দেওয়ার কথা বলে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এক বাংলাদেশি তরুণীকে। আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে ২০২১ সালের মে মাসে গণধর্ষণের শিকার হন তিনি। এ হীন ঘটনায় টিকটক রিদয় নামের এক বাংলাদেশি যুবক ও তার বন্ধুরা জড়িত থাকে।
ব্যাঙ্গালুরুতে তথা ভারতের মাটিতে এমন হীন কাজ ঘটে যাওয়ার প্রেক্ষিতে ওই তরুণীকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ব্যাঙ্গালুরুর একটি দায়রা আদালত।
নির্দেশে একটি ফান্ডের মাধ্যমে ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে ৭ লাখ রুপি দেওয়ার কথা জানানো হয়। আদালত বলেছেন, ভারতের নির্ভয় ফান্ড থেকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭ লাখ রুপি নির্যাতিতা তরুণীকে দিতে হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বুধবার (৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। সমগ্র ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্বদেশীদের হাতে ধর্ষণের ঘটনা বলে উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমটি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ওই তরুণী আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েছিলেন। যখন তাকে পাচার করা হয় তখনও প্রাপ্ত বয়স্ক হননি তিনি। চক্রটির হাতে তিনি যৌন নিগ্রহ ও ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। ওই তরুণীর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে ভারতীয় পুলিশই ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এরপর ২০২২ সালের মে মাসে অপর এক নারীর সঙ্গে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
দায়রা আদালত মে ২০২২ আদেশে বলেছিলেন, ‘এ অপরাধের তীব্রতা এবং আদালতের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্যাতিতা তরুণী জাতীয় আইন সহায়তা কর্তৃপক্ষের (নালসা) ক্ষতিপূরণ স্কিমের আওতায় ৭ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য।’ আইন অনুযায়ী তাকে এ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়।
আদালত তাৎক্ষণিকভাবে ওই তরুণীকে ক্ষতিপূরণের অর্থ বুঝিয়ে দিতে বিভাগীয় আইন সহায়তা কেন্দ্রকে নির্দেশ দেন। কিন্তু যেহেতু নির্যাতিতা ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে চলে এসেছেন ফলে তাকে ভিডিও কলের মাধ্যমে হাজির করে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে অর্থ বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে কিশোরগঞ্জে নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন এবং জীবনে যেসব ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেছে সেগুলোর মানসিক যন্ত্রণা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।
ওই তরুণী আরও জানিয়েছেন, তাকে ৪০ হাজার রুপিতে একটি পার্লারে কাজ দেওয়ার কথা বলে ব্যাঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে অবৈধপথে কোলকাতায় যান তিনি। সেখানে আধার কার্ড তৈরি করে ও নাম পরিবর্তন করে তাকে ব্যাঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়।
জাগরণীয়া.কম/ডিআর.