রোহিঙ্গা গণহত্যা, ধর্ষণ ও জাতিগত নিধন
বিশ্বের চোখ হেগে
প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:৩৩
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর কেন জাতিগত নিধন চালিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক আদালতে ১০ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সেই প্রশ্নের জবাব দেবেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। এর মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে মনে করছেন শুনানি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গাম্বিয়ার মামলায় প্রথমবারের মতন রোহিঙ্গাদের উপর চালানো গণহত্যা, ধর্ষণ সহ জাতিগত নিধনের জন্য যা করেছে মিয়ানমার, সে সংক্রান্ত ওঠা সকল প্রশ্নের জবাব দিতে হবে তাকে। যেই ১৯৫৬ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সনদে স্বাক্ষর সকল দেশই এমন শুনানি হলে কিংবা অভিযোগ দায়ের করা হলে তাতে অংশ নিতে বাধ্য।
ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশ গাম্বিয়ার করা মামলার বিচার শেষ হতে কয়েক বছর লাগতে পারে। তবে শুনানি শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারকে আইসিজে বেশকিছু অন্তর্বর্তী নির্দেশনা দিতে পারে বলে আভাস মিলছে।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ১৯৫৬ সালে জাতিসংঘের গণহত্যা সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে মিয়ানমার আইসিজের যে কোনো নির্দেশনা মানতে বাধ্য। ফলে এটা স্পষ্ট যে, রোহিঙ্গাদের নির্মম নির্যাতনের বিচার শেষ হওয়ার আগেই বড় ধরনের চাপে পড়তে যাচ্ছে মিয়ানমার।
পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের নেতৃত্বে এই শুনানি পর্যবেক্ষণে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। সেখানে থাকছেন তিন রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিও।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে সদস্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, পুরো বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সাথে নিয়েছে বিশ্ব। শুনানিতে অংশ নিতে এর মধ্যেই বিভিন্ন দেশের সুশীল সমাজ ও নীতি নির্ধারকরাও থাকছেন। ফলে মিয়ানমার চাইলেও কোন কিছু লুকাতে পারবে না।
তিনি বলেন, এই বিচারের ফলে সিকিউরিটি কাউন্সিলকে এটাকে বিবেচনায় নিতে হবে, কারণ আমরা এতদিন পর্যন্ত দেখেছি যে কয়েকটি বড় দেশের কারণে সিকিউরিটি কাউন্সিল এতদিন কোন অ্যাকশন নেয়নি।
আর শরণার্থী বিশেষজ্ঞ ও ঢাকার পশ্চিমা কূটনীতিকদের মতে, মিয়ানমারকে আদালতে দাড় করাবার মানেই হচ্ছে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা। এই চেষ্টা যেন ভাবেই যেন বৃথা না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখবার আহবান জানান তারা।
১০ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) থেকে টানা তিন দিন চলবে শুনানি। এরপর আতালত যে রায় কিংবা পর্যবেক্ষণ দেবে তা শুনতে বাধ্য মিয়ানমার। যদি তার বরখেলাপ ঘটে তবে তা চলে যাবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের হাতে। তখন পরিষদ যা বলবে তা অক্ষরে অক্ষরে করতে বাধ্য থাকবে মিয়ানমার।