শ্রীলঙ্কায় সব ধরণের সাধারণ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ

প্রকাশ : ০৫ মে ২০১৯, ১১:৫৫

জাগরণীয়া ডেস্ক

শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ হামলার পর নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে বড় আকারের ছুরি-তরবারিসহ অন্যান্য সাধারণ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে লঙ্কান প্রশাসন। এগুলোর বাইরে কারও কাছে পুলিশ বা সামরিক বাহিনীর ইউনিফর্ম থাকলে সেটিও নিকটস্থ থানায় জমা দিতে হবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। 

লঙ্কান পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকারা বলেন, শনিবার থেকে শুরু হওয়া এ জরুরি নির্দেশনা আজ রোববার পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তবে দৈনন্দিনকাজে ব্যবহৃত ছুরি-তরবারি এর আওতাভুক্ত নয় বলে উল্লেখ্য করা হয়।

হামলার ব্যাপারে ভারতের গোয়েন্দা তথ্য থাকার পরও কেন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, নতুন করে কিছু বলার নেই। শ্রীলঙ্কা সরকারের মধ্যে বোঝাপড়ায় হয়তো একটা ফাঁক থাকতে পারে, যা এখন সবারই জানা।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় সবাই স্বাধীন। গত ১০ বছরে সেখানে বড় ধরনের কোনও হিংসা বা হানাহানির ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণ দেশ হওয়ায় নিরাপত্তা নিয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে খুব একটা চিন্তা ছিল না। তবে সিরিজ বিস্ফোরণের পর থেকে গোটা দেশজুড়ে কয়েক দফায় তল্লাশি, অভিযান চালিয়েছে দেশটির নিরাপত্তাবাহিনী। অভিযানে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় এই সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি চার্চে বোমা হামলা হয়। এর আধাঘণ্টার মধ্যেই রাজধানী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সেন্ট সেবাস্টিন চার্চ ও ২৫০ কিলোমিটার দূরে বাট্টিকালোয়ার জিওন চার্চেও বোমা হামলা চলে। এছাড়া রাজধানী কলম্বোর কিংসবারি, সাংগ্রিলা এবং সিনামোন গ্র্যান্ড হোটেলেও তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে না উঠতেই দেহিওয়ালা জেলার হোটেলে এবং দেমাতাগোদা জেলার একটি স্থাপনায় ফের হামলা হয়। এতে নিহত হন ২৫৯ জন। ভারত ও শ্রীলঙ্কার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার মাত্র দুই ঘণ্টা আগেই লঙ্কান কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এর আগে গত ৪ এপ্রিল ও ২০ এপ্রিল রাতেও দু’দফায় লঙ্কান গোয়েন্দাদের এ বিষয়ে সতর্ক করে দিল্লি।

এদিকে তথ্য থাকার পরও হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনারমুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। পুলিশের কাছে আগাম গোয়েন্দা তথ্য থাকলেও এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্টকে জানানো হয়নি। পরে, হামলার গোয়েন্দা তথ্য গোপন করায় প্রতিরক্ষা সচিব হেমাসিরি ফার্নান্দো এবং পুলিশ প্রধান পুজিথ জয়াসুন্দরাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন সিরিসেনা।

সূত্র: বিবিসি নিউজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত