ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে হামলা, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০১৯, ১৪:১২

জাগরণীয়া ডেস্ক

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুইটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় বন্দুকধারীদের হামলায় ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪৮ জন। খবর বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়েন এর। 

রাজ্যের পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ জানান, গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের মধ্যে দিয়ে এই হামলার সূত্রপাত। দুই মসজিদে হামলায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী। যার মধ্যে একজন অস্ট্রলিয়ান বংশদ্ভুত। হামলায় জড়ি সন্দেহে আটক এক ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক বলে নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। তিনি বলেন, সন্দেহভাজন হামলাকারী ‘একজন চরম ডানপন্থি নৃশংস সন্ত্রাসী’।

আহতদের বেশিরভাগেরই চিকিৎসা চলছে স্থানীয় ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালে। হাসপাতালের বরাত দিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে হাসপাতালের ১২টি অপারেশন থিয়েটারে রোগীদের অপারেশন চলছে। আহতদের মধ্যে শিশু থেকে শুরু করে সমবয়সী বাসিন্দারা রয়েছেন। আঘাতের উপর ভিত্তি করে কারো কারো একাধিক সার্জারি লাগবে। অন্তত ২০০টি পরিবারের লোকজন এ হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তবে নিরাপত্তা এবং সব ধরণের ঝুঁকি এরাতে পরিবারের কাউকেই এখন হাসপাতালে আহতদের সাথে দেখা করার অনুমতি দেয়া যাচ্ছে না। প্রিয়জনের খবর নেয়ার জন্য হামলার স্থান মসজিদ ও হাসপাতালের বাইরে তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান। 

হামলার পর শোক প্রকাশ করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আরডের্ন বলেন, নিঃসন্দেহে এটি নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের কালো দিনগুলোর মধ্যে একটি। ‘নজিরবিহীন’ এ পরিস্থিতিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এটি অস্বাভাবিক এবং অপ্রত্যাশিত নৃশংসতা। 

হামলার পর পরই ক্রাইস্টচার্চ কর্তৃপক্ষ নগরীর সব মসজিদ পরবর্তী নোটিস না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নগরীর সব স্কুলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সাথে স্থানীয়দের নিজেদের বাড়িতে অবস্থান করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। 

হামলার সময় আল নূর মসজিদে অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, হামলাকারী সামরিকবাহিনীর মত পোশাক পরে ছিল। হাতে থাকা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে সে ক্রামগত গুলি ছুড়তে থাকে।

আল নূর মসজিদে হামলাকারী তার হেলমেটে বসানো ক্যামেরায় গুলি চালানোর পুরো দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করেছেন। প্রায় ১৭ মিনিটের ওই লাইভে হামলার পুরো দৃশ্য দেখানো হয়। এরই মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ঐ ব্যক্তির সব কিছু সরিয়ে নিয়েছে পুলিশ। তার ফেইসবুক ও ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট সরিয়ে দেয়া হয়েছে। টুইটার থেকেও ওই ব্যক্তির একাউন্ট মুছে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে ঐ ভিডিও কারও কাছে থেকে থাকলে তা প্রচার না করার জন্য অনুরোধ করেছে দেশটির পুলিশ। 

এদিকে, নিউজিল্যান্ড সফরে থাকা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কয়েকজন ক্রাইস্টচার্চ আল নূর মসজিদে নামাজ পড়তে রওয়ানা হয়েছিলেন। বন্দুক হামলার সময় তাদের গাড়িটি মসজিদের ৫০ গজের মধ্যেই ছিল। হামলার খবর পেয়ে তারা দ্রুত সরে যান। আরও ৩/৪ মিনিট আগে গেলেই মসজিদের ভেতরেই তারা থাকতেন বলে জানিয়েছেন ম্যানেজার খালেদ মাসুদ। শনিবার ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্ট খেলতে মাঠে নামার কথা ছিল বাংলাদেশ দলের। হামলার পর ওই ম্যাচটি বাতিল ঘোষণা করা হয়।​

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত