ভারতের বড়মা বীণাপাণি দেবীর প্রয়াণ
প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০১৯, ১৭:১৯
চলে গেলেন ভারতের মতুয়া মহাসংঘের প্রধান উপদেষ্টা গুরুমাতা বড়মা বীণাপাণি দেবী। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগে ৫ মার্চ (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৫২ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০১ বছর।
বড়মায়ের মৃত্যুতে মতুয়া মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার মৃত্যুসংবাদে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক টুইটে তিনি বলেন, "বড়মা বীণাপাণি দেবী আমাদের সময়ের একজন আইকন। বহু মানুষের অনুপ্রেরণা ও শক্তির উৎসস্থল। আগামী প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে বড়মায়ের আদর্শ । সামাজিক ন্যায় ও ঐক্যের জন্য তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। গত মাসে বড়মায়ের আশীর্বাদ নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। তাঁর সাক্ষাৎ চিরকাল আমার মনে থেকে যাবে। দুঃখের সময়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের পাশে রয়েছি আমরা"।
এদিকে বড়মায়ের মৃত্যুসংবাদ শোনার পর কলকাতার পিজি হাসপাতালে ছুটে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, "রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য হবে। বড়মা একজন অভিভাবকের মতো আমার পাশে থেকেছেন। আমাকে বহুবার সমর্থন করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে আমার বিরাট ব্যক্তিগত ক্ষতি হয়ে গেল। বড়মাকে আমরা রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গবিভূষণে ভূষিত করেছিলাম। তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত"।
অবিভক্ত ভারতবর্ষের বরিশাল জেলার জব্দকাঠিতে জন্ম নেন মতুয়া সম্প্রদায়ের গুরুমাতা বীণাপাণি দেবী। অল্প বয়সেই বিয়ে হয় গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দির মতুয়া আশ্রমের প্রমথ রঞ্জন ঠাকুরের সাথে। দেশ বিভাগের পর স্বামীকে নিয়ে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। পরবর্তীতে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে মতুয়া সম্প্রদায়ের আশ্রম গড়েন তারা। স্বামীর মৃত্যুর পর দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি একাই আশ্রমের দায়িত্ব নেন। এরপর থেকেই মতুয়া সম্প্রদায়ের গুরুমাতা হিসেবে পূজিত হতে থাকেন তিনি।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে কলকাতার এসএসকেএম (পিজি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বীণাপাণি দেবী। গত ৪ মার্চ (সোমবার) তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। ৬ মার্চ (বুধবার) কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে সম্মানসূচক ডিলিট উপাধি দেওয়ার কথা ছিল। তার আগেই চলে গেলেন তিনি।