১৬ বছরের অনশন ভাঙবেন ইরম শর্মিলা
প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০১৬, ১৬:০২
ভারতের মনিপুরের রাজনৈতিক কর্মী ইরম শর্মিলা চানু দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে অনশন করছেন। তবে মঙ্গলবার (০৯ অগাস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি রেকর্ড বুকে জায়গা করে নেওয়া সেই অনশন ভাঙছেন বলে এনডিটিভি ও বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে।
শুরু হয়েছিল ৪ নভেম্বর, ২০০০ সাল থেকে। মণিপুর থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষ অধিকার আইন বা আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে।
তবে অনশন ভাঙার এ সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের জেরে রীতিমত উত্তপ্ত মণিপুর। শর্মিলার মা, দাদা সহ পরিবার চায়, অনশন চালিয়ে যান তিনি। স্থানীয় জঙ্গি গোষ্ঠীও হুঁশিয়ারি দিয়েছে, অনশন ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়ে শর্মিলা ভুল করেছেন। অনশন ভাঙা তো চলবেই না, বিয়ের পিঁড়িতেও বসতে পারবেন না তিনি।
৪৪ বছরের ইরম শর্মিলা গত মাসে জানিয়ে দেন, ১৬ বছরের অনশন এবার ভাঙবেন তিনি। দীর্ঘদিন পাশে থাকা প্রেমিক ডেসমন্ড কুটিনহোকে বিয়ে করে সংসার পাতবেন, পা রাখবেন নির্বাচনী রাজনীতিতে। এভাবেই শুরু হবে আফস্পার বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়। কিন্তু মণিপুর, বিশেষত ইম্ফল উপত্যকা তাঁর এই সিদ্ধান্তে দ্বিধাবিভক্ত। বেশিরভাগেরই বক্তব্য, শর্মিলার জীবন আর তাঁর একার নেই, সবার আশা আকাঙ্খাকে মর্যাদা দিয়ে তাঁর অনশন চালিয়ে যাওয়া উচিত। তাঁর প্রচণ্ড অসন্তুষ্ট পরিবারও রয়েছে এই দলে। তাঁর মা, ৯৪ বছরের সখী দেবী মেয়ের অনশন ভঙ্গের সরাসরি বিরোধিতা করেছেন। অনশন ভেঙে মেয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলে তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেবেন কিনা, তাও ঠিক করেননি তিনি। শর্মিলার দাদা ইরম সিংহজিত সেভ শর্মিলা ক্যাম্পেন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালান। বোন ১৬ বছরের অনশন ভেঙে দিলে তাঁর সংস্থার অস্তিত্বই অর্থহীন হয়ে যাবে। উল্টোদিকের মানুষরা সংখ্যালঘু। তাঁদের বক্তব্য, শর্মিলা নিজের জীবন নিয়ে কী করবেন না করবেন, সেটা একেবারেই তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত।
ইম্ফলের কাছে মালোম এলাকায় অসম রাইফেলসের গুলিতে ১০জনের প্রাণহানির ঘটনার দুদিন পর আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে অনশনে বসেন শর্মিলা। আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে প্রশাসন। হাসপাতালের ওয়ার্ডে নাকে রাইলস টিউব গোঁজা শর্মিলার ছবি তখন থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে।