মেয়ে সন্তান হলেই রহস্যজনক মৃত্যু, গ্রেপ্তার বাবা-মা

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:৪৬

জাগরণীয়া ডেস্ক
ঘটনার তদন্তে পুলিশ, মৃত নবজাতক

পর পর চারটি কন্যাসন্তানের মধ্যে তিনজনেরই জন্মের কয়েকদিনের মধ্যেই রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, কন্যাসন্তান হওয়ায় বাবা-মা নিজেরাই সন্তানদের মেরে ফেলছেন।

এমনি মধ্যযুগীয় ঘটনা ঘটেছে ভারতের কলকাতার বাগদার সিন্দ্রাণীর বাবুপাড়ায়।

প্রতিবেশীরা জানান, মণিকুমার বিশ্বাস ও রানি বিশ্বাসের প্রথম কন্যা সন্তান জন্মায় বছর পাঁচেক আগে। কয়েক দিন বেঁচে ছিল সে। হঠাৎই মারা যায়। চার বছর আগে দ্বিতীয় মেয়ের জন্ম হয়। জন্মে পরে দেড়মাস পর্যন্ত সে ছিল পড়শি গীতা মণ্ডলের হেফাজতে। সে এখনও বেঁচে আছে। বছরখানেক আগে বিশ্বাস দম্পতির তৃতীয় কন্যাসন্তান হয়। মাত্র তেইশ দিনের মধ্যে রহস্যজনক মৃত্যু হয় শিশুটির। গত ২১ জানুয়ারি (সোমবার) এই দম্পতির চতুর্থ সন্তানটি মৃত্যুবরণ করে। প্রতিবেশীরা কান্নার শব্দ শুনে ঐ দম্পতির ঘরে নিথর শিশুটিকে দেখতে পান। তবে কীভাবে মারা গেছে জানতে চাইলে কেউই সদুত্তর দিতে পারেননি। 

গ্রামের পঞ্চায়েতের স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, রানি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে তারা নিয়মিত খোঁজ রাখছিলেন। তাদেরই এক জন সাগরিকা অধিকারী বলেন, ‘ওরা মেয়ে সন্তান চাইত না। মেয়ে হওয়ার আশঙ্কায় গর্ভপাত করাতে চেয়েছিল। আমরা বারণ করি। অনেক বোঝাই। সন্দেহ হওয়ায় নিয়মিত খোঁজ খবরও রাখছিলাম। কিন্তু যা সন্দেহ ছিল, এখন দেখছি সেটাই সত্যি হল!’

সিন্দ্রাণী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, সুস্থ সন্তানেরই জন্ম দিয়েছিলেন রানি। গত ২০ জানুয়ারি (রবিবার) শিশুটিকে সিন্দ্রাণী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শিশুটি সুস্থ আছে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক।

গ্রামবাসীরা  অভিযোগ করেছেন, মেয়ে হয়েছে বলে ওরা বাচ্চাকে অযত্নে ঠান্ডা মেঝেতে শুইয়ে রাখত। ঠিক মতো খেতেও দিত না। ওর বাচ্চাকে প্রতিবেশীরা মিলে দুধ কিনেও খাইয়েছেন। মণির দ্বিতীয় মেয়েটিকে নিজেদের কাছেই রেখেছেন প্রতিবেশীরা।

এদিকে, চতুর্থ সন্তানটির মৃত্যুর পর পুলিশে খবর দেন প্রতিবেশীরা।  চুমকি হালদার নামে এক প্রতিবেশীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মণিকুমার বিশ্বাস ও রানি বিশ্বাস দম্পতিকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির মৃত্যুর কারণ বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেননি এই বিশ্বাস দম্পতি। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। সেই সাথে আগের সন্তানেরা কীভাবে মারা গেলো সেটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

সূত্র: আনন্দবাজার 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত