যৌন নিগ্রহের প্রতিবাদ, কারাগারে মিশরীয় তরুণী!
প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:৪৯
যৌন নিগ্রহের অভিযোগ করায় উল্টো তরুণীকেই কারাগারে প্রেরণ করেছে মিশরের আদালত। খবর রয়টার্স এর।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) মিশরের ঐ তরুণীকে ‘ভুয়া খবর ছড়ানো’ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের জেল প্রদান করে দেশটির আদালত। সেই সাথে তাকে ১০ হাজার মিশরীয় পাউন্ড জরিমানা করা হয়।
রায় ঘোষণার পর আমালের স্বামী মহম্মদ লোতফির বলেন, যৌন হেনস্থাকেই স্বীকৃতি দিল আদালত। যে কেউ হেনস্থা করতে পারে। অপরাধীর শাস্তি হবে না। আর নিগৃহীতদের পরামর্শ, মুখ বন্ধ রাখো। না হলে জেল।
উল্লেখ্য, আমাল ফাথি নামে ৩৩ বছর বয়সী ঐ মিশরীয় তরুণী পেশায় একজন মানবাধিকার কর্মী। ২০১৮ সালের মে মাসে আমাল ফাথি ফেসবুকে ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে কীভাবে একটি ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা রক্ষী দ্বারা যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন, সেই ঘটনার বর্ননা দেন। সাহস করে এইটুকু জানানোর পর অপরাধীর তো সাজা হয়ই নি, উল্টো নিজেই দুই মামলায় ফেঁসে যান।
ফেসবুকে ঐ পোস্টের দুইদিন পর তার বাড়িতে হানা দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। আমাল, তার স্বামী ও ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে স্বামী-পুত্রকে ছেড়ে দেওয়া হলেও আমাল বন্দিই রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ‘ভুয়া খবর ছড়ানো’ ও ‘আপত্তিকর জিনিস সঙ্গে রাখা’র অভিযোগে মামলা শুরু হয়।
আমালের আইনজীবী দোয়া মুস্তাফা জানান, ২০ হাজার পাউন্ড দিলে আপাতত কারাদণ্ড স্থগিত রাখা হবে বলে জানিয়েছে কোর্ট।
তিনি আরও বলেন, আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাবেন তারা, যদিও তেমন কোন লাভ হবে না। সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্য হিসেবে আমালের নাম জড়িয়ে অপ্র একটি মামলা করা হয়েছে।
আমালের সহকর্মীরা বলছেন, আমাল কোনভাবেই জঙ্গি তৎপরতার সাথে জড়িত নয়। তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী।
লন্ডনের একটি মানবাধিকার সংগঠন বলেছে, যে আক্রান্ত, সে-ই কি না জেলে। আর অপরাধী মুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে। লজ্জাজনক ঘটনা। যৌন নিগ্রহের প্রতিবাদ জানানোর সাহস দেখিয়েছিলেন উনি।
জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, মিশরের ৬০ শতাংশ নারী জীবনে কখনও না কখনও, কোনও না কোনও ভাবে যৌন নিগ্রহের শিকার। ২০১৭ সালেই একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা কায়রোকে মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক শহর হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।