বাড়ি ফিরেছেন ফিলিস্তিনের সেই প্রতিবাদী তরুণী
প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০১৮, ১১:৫০
এক ইসরায়েলি সৈন্যকে চড় ও লাথি মারার দায়ে আট মাস কারাভোগের পর মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন ফিলিস্তিনের সেই প্রতিবাদী তরুণী ও সাহসী আইকন আহেদ তামিমি।
১৭ বছর বয়সী আহেদ পরিণত হন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের নতুন প্রতীকে। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর নবী সালাহ’য় নিজের বাড়ির বাইরে একজন ইসরায়েলি সেনাকে চড় ও লাথি মারেন আহেদ। আর সেই ভিডিও ধারণ করেন তার মা নারিমান তামিমি। তিনি ওই ভিডিও তার ফেসবুকে প্রকাশ করলে তার ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ঘটনার পর ফিলিস্তিনিদের কাছে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরোধিতার প্রতীক হয়ে ওঠেন আহেদ তামিমি। তবে ইসরায়েলিরা তাকে একজন প্রকাশ্য উত্তেজনা-সৃষ্টিকারী হিসেবে বিবেচনা করে।
আহেদ তামিমিকে যখন গ্রেপ্তার করা হয় তখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর। গ্রেপ্তারের পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগ আনে। কিন্তু গেল মার্চে তিনি শারীরিক হামলাসহ চারটি অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন।
ইসরায়েলের শিক্ষামন্ত্রী নাফতালি বেনেট বলেছেন, আহেদ তামিমি ‘সারা জীবন কারাবাস’ পাওয়ার যোগ্য। এদিকে অনেক ইসরায়েলি মনে করেন, আহেদ তামিমির পরিবার তাকে দিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের উস্কানি দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
তবে চড় ও লাথির ঘটনার পর ফিলিস্তিনিদের জাতীয় আইকনে পরিণত হওয়া আহেদের ম্যুরাল ও পোস্ট বিভিন্ন রাস্তায় শোভা পায়। আর তার বাবা আহেদের মুক্তির দাবিতে অনলাইন ১৭ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন।
গত ২৯ জুলাই সাহসী এই তরুণীর জেল থেকে মুক্তির খবরটি প্রকাশিত হয়। বিবিসির নিদা ইব্রাহিম জানান, ৮ মাস কারাভোগের সাহসী এই তরুণীকে স্বাগত জানানোর জন্য জেলের বাইরে জনতার ভিড় জমে যায়। পরিচিতজনরা তাকে পেয়ে জড়িয়ে ধরেন ও শুভেচ্ছা জানান। অনেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ আন্দোলনের পক্ষে শ্লোগান দিচ্ছিলেন।
এ সময় সমবেত জনতার উদ্দেশে ছোট একটি বক্তৃতাও দেন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের অনন্য প্রতীক আহেদ তামিমি। তিনি বলেন, আজ যারা এখানে সমবেত হয়েছেন, তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি। আমি আশা করি সবাই সংবাদ সম্মেলনে আসবেন। যেখানে আমি আমার বার্তা তুলে ধরবো। কারাগারের অন্য যারা নারী বন্দী আছেন, আমি তাদের বার্তাও তুলে ধরবো। তারা চেয়েছেন, আমি যেন তাদের হয়ে কথা বলি।
এদিকে আহেদের বাবা বাসেম তামিমি কি এখন চাইবেন যে তার মেয়ে যেন ঘরের মধ্যে নিরাপদে থাকে, এমন প্রশ্নের জবাবে বাসেম বলেন, এখানে ঘর কি নিরাপদ? আমার তো মনে হয় না। ফিলিস্তিনে নিরাপদ জায়গা কোথায় আমি জানি না।
সূত্র: বিবিসি