সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা আর নেই
প্রকাশ | ২৪ জুন ২০১৮, ১২:১৬
অবশেষে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়ে সৌদি নারীদের জন্য উন্মুক্ত হলো গাড়ি চালানো। খবর বিবিসি এর।
পরিবর্তনের যে হাওয়া সৌদি আরবে বইছে, সেখানেই আরো একটি পালক যোগ হলো সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ার মাধ্যমে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিশন ২০৩০ এর অংশ হিসেবে এই ঐতিহাসিক দিনটির দেখা পেলেন সৌদি নারীরা। সৌদি যুবরাজ সালমান চেষ্টা করছেন, তেল ভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামো থেকে সৌদিকে সরিয়ে একটি মুক্ত অর্থনৈতিক কাঠামোতে দেশটিকে নিয়ে আসা। আর সে লক্ষ্যেই নারীর অগ্রযাত্রাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার পর ২৩ জুন দিবাগত রাতে সৌদি রাজধানী রিয়াদের রাস্তায় দেখা গেছে উচ্ছ্বসিত নারীদের। এ প্রসঙ্গে সৌদি টেলিভিশনের উপস্থাপিকা বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার পর ২৩ জুন দিবাগত রাতে ড্রাইভিং সিটে বসেছিলাম কিছু সময়ের জন্য। এটা একটি ঐতিহাসিক মুহুর্ত। আমার আনন্দ বলে বুঝাতে পারবো না।
২১ বছর বয়সী হাতুন বিন দাখলিল বলেন, অনেক অনেক অপেক্ষার পর আমরা এই দিনটি পেলাম। আমাদের গাড়ি চালানোর জন্য আর কোন পুরুষ মানুষের দরকার নেই।
পৃথিবীতে সর্বশেষ সৌদি আরবই এমন একটি দেশ ছিল, যেখানে নারীদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হয়। এ বছর ৫ জুন ১০ জন নারী তাদের বিদেশী ড্রাইভিং লাইসেন্স সৌদি ড্রাইভিং লাইসেন্সের সাথে সমন্বয় করে। সেসময় কর্তৃপক্ষ ধারণা করেছিলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠতে উঠতে কমপক্ষে ২০০০ নারী গাড়ির লাইসেন্স করে ফেলবেন।
এ প্রসঙ্গে সংবাদদাতা ওরলা গোয়েরিন বলেন, প্রকৃত অর্থেই এই দিনটি সৌদি নারীদের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। তবে এই স্মরণীয় মুহুর্তেও সৌদি এক্টিভিস্টদের মধ্যে রয়েছে বিষেদের ছায়া। যারা দীর্ঘদিন নারীর ড্রাইভিং নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, তারা আজ এই আনন্দের মুহুর্তে মাঠে নেই। গত মাসেই তাদেরকে ঠেলে দেয়া হয়েছে কারাগারে। একই সঙ্গে এক্টিভিস্টদের কারাগারে রাখা এবং নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ার ঘটনা প্রগতিশীলদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। তারা সৌদি সরকারকে এই দ্বিচারী মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখনো নারী স্বাধীনতার আরও অনেক বাকি। স্বাস্থ্য, ভ্রমন, বিয়ে, তালাক এমনকি কারাগার থেকে বের হওয়ার জন্যও সৌদি নারীদের পুরুষ অভিভাবকের মতামতের প্রয়োজন হয়।