বাল্যবিবাহ: কমেছে দক্ষিণ এশিয়ায়, বেড়েছে উত্তর আফ্রিকায়
প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০১৮, ০২:২৩
বাল্যবিয়ে হ্রাসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে। অন্যদিকে, বাল্য বিবাহের প্রবণতা এখনও সবচেয়ে বেশি আফ্রিকায়। তবে গত এক দশকে সারা বিশ্বে বাল্যবিবাহ কমেছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, গত এক দশকে সারা পৃথিবীতে আড়াই কোটি বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে এবং বাল্যবিয়ে পনের শতাংশ কমে এসেছে। যেখানে এক দশক আগেও এই সংখ্যা ছিল প্রতি চারজনে একজন। বর্তমানে সেটি প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে একজন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাল্যবিয়ে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে দক্ষিণ এশিয়ায়। সেখানে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ের হার প্রায় ৫০ শতাংশ থেকে এখন ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।
ঢাকায় ইউনিসেফের একজন কর্মকর্তা সোনিয়া সরদার বলছেন, নতুন এই রিপোর্টে তারা দেখছেন বাংলাদেশেও বাল্য বিয়ের হার কমছে। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে এক ধরনের উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। অল্পবয়সী মেয়েরাও এখন তাদের বিয়ে প্রতিরোধে এগিয়ে আসছেন। স্থানীয় প্রশাসন এবং কমিউনিটিতে যেসব সংগঠন কাজ করে তারাও এগিয়ে এসেছেন।
তবে ঠিক কতটুকু হ্রাস পেয়েছে তা নিশ্চিত না হওয়া গেলেও জাতিসংঘ বলছে, বাল্যবিয়ের সংখ্যা কমেছে। কিন্তু এখনও সেটা ৫০ শতাংশের উপরেই রয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০১১ সালের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে ৫২ শতাংশ মেয়ে বাল্য বিয়ের শিকার।
কিন্তু নারী অধিকারকর্মী নীনা গোস্বামী বলেন, বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের হার এখনও অনেক বেশি। কিন্তু আশা কথা এই যে, এখন সবাই জানে বিয়ের জন্যে ন্যুনতম বয়স ১৮ বছর। হার কমেছে কি বেড়েছে তার চাইতেও এটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই না একটি শিশুও এ ধরনের বিয়ের শিকার হোক।
ইউনিসেফের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সাহারা মরুভূমির পার্শ্ববর্তী উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রতি তিনজন নারীর একজনের বাল্যকালেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এক দশক আগে এটা ছিলো প্রতি পাঁচজনে একজন। কিন্তু তারপরেও ইথিওপিয়াতে এধরনের বিয়ের সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
উলেখ্য, জাতিসংঘের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে বিশ্ব নেতারা ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা