ইরানে হিজাব সরে গেলে গ্রেপ্তার নয়
প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০০:০২
ইরান নারীদের পোশাকের ব্যাপারে কঠোর রক্ষণশীল একটি দেশ। আর অসাবধানতাবশত কোনো নারীর হিজাব মাথা থেকে সরে গেলে গ্রেপ্তার করা হবে না বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ।
সপ্তাহের শুরুতে ইরানের রাজধানী তেহরানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ঘোষণা দেন।
তবে এর মাধ্যমে এক ধরনের মধ্যপন্থা অবলম্বন করা হয়েছে বলে আইনটির দিকে আঙুল তুলছেন নারীবাদীরা। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে দেশটিতে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। সে সময় থেকে হিজাব না পরলে ইরানি নারীদের গ্রেপ্তারও করা হতো।
তেহরানের পুলিশ প্রধান হোসেইন রাহিমি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ধর্মীয় পোশাকের রীতি পালন না করার জন্য এখন আর কোনো নারীকে গ্রেপ্তার করা হবে না বা তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলাও দায়ের করা হবে না। তিনি আরও বলেন, তবে যারা হিজাব পরবে না তাদের ইসলামি শিক্ষা ক্লাসে অংশগ্রহণে বাধ্য করা হবে।
মাশিহ আলিনেজাদ একজন ইরানি প্রবাসী নারী। তিনি দেশটিতে বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে আসছিলেন। তিনি পুলিশ কর্মকর্তা হোসেইন রাহিমির বক্তব্য নিয়ে কথা বলেন। মাশিহ আলিনেজাদ বলেন, বক্তব্যে পুলিশ প্রধান বলেছেন- ভুল করে যদি মাথা থেকে হিজাব খুলে যায়, তাহলে নারীদের গ্রেপ্তার করা হবে না, কিন্তু তাদের ধর্মীয় শিক্ষার ক্লাসে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, কেউ তাদের হিজাব ভুল করে খুলে রাখে না।
গেল ডিসেম্বরে হিজাবের বিরুদ্ধে এক নারীর করা প্রতিবাদের কথাও তুলে ধরেন মাশিহ আলিনেজাদ।
প্রতিবাদী সেই নারী নিজের হিজাব খুলে একটি লাঠির মাথায় বেঁধে উচু স্থানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর জন্য গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল তাকে। পরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে এর পর পরই আরও তিন নারী একইভাবে প্রতিবাদ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েন।
মাশিহ আলিনেজাদ বলেন, এই আন্দোলনকারীদের হাত ধরে সব নারীই এখন মুক্তি চাইছে। পুলিশের কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে বলেও উল্লেখ করেন আলিনেজাদ।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালের পর থেকেই এই নিয়েও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন কিছু ইরানি নারী। সেই বছরই সবচাইতে বড় আন্দোলনটি হয়। মার্চের ৮ তারিখ, বিশ্ব নারী দিবসে প্রায় এক লাখ নারী তাদের হিজাব খুলে রাস্তায় নেমে আসেন।