নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের কঠোর সমালোচনা
প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ২২:৩৮
রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনা ও চাপ অব্যাহত রাখার তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ।
১৪ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সকালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক সভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এ তাগিদ দেন।
যুক্তরাজ্যসহ বেশ কিছু সদস্য রাষ্ট্রের অনুরোধে কুয়েতের সভাপতিত্বে নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের উপর এ বছরের প্রথম উন্মুক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে জাতিসংঘের পক্ষে শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এবং ডিপার্টমেন্ট অব পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্সের সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনকা বক্তব্য রাখেন।
সভায় রাষ্ট্রদূত মাসুদ রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।
এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, ‘এই সংকটের শিকড় মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারে নিহিত’।
মাসুদ অশা প্রকাশ করে বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত শিগগিরই নিয়োগ করা হবে এবং তার মাধ্যমে দেশটির সরকারের সাথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হবে।
সভায় নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের সকলেই প্রায় সাত লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয় দেবার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তারা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া তারা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমারে প্রয়োজনীয় সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে দেশটিকে সহযোগিতার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অহ্বান জানিয়েছেন।
পরিষদের কতিপয় সদস্য কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মিয়ানমারের অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়াসহ অন্যান্য অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
এছাড়া উত্তর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা গ্রামসমূহে গণ কবর উদ্ধার, বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড ও ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরির খবরে নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কিছু সদস্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তারা এসবের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ও দুর্গত রোহিঙ্গাদের কাছে নির্বিঘ্নে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
কয়েকটি সদস্যদেশ আগামী মাসগুলোতে তাদের নিজ নিজ সভাপতিত্বকালে মিয়ানমার পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা পরিষদের কার্যতালিকায় রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।