ইসরায়েলে গোপন বৈঠক: পদ ছাড়তে হল ব্রিটিশ মন্ত্রীকে
প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:৪১
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীসহ দেশটির প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে ‘এখতিয়ার বহির্ভূত’ বৈঠক নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল।
রাষ্ট্রীয় প্রেটোকল ভেঙে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ওই বৈঠক করা নিয়ে যুক্তরাজ্যে তুমুল সমালোচনা শুরু হলে বুধবার প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র দেন প্রীতি প্যাটেল।
ব্রিটেনের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, প্রীতি প্যাটেলের পদত্যাগ থেরেসা মে’র সরকারকে আরও একদফা বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমগুলো লিখেছে, সরকারি সফরে দক্ষিণ আফ্রিকায় ছিলেন প্রীতি প্যাটেল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সফর সংক্ষিপ্ত করে বুধবার সন্ধ্যায় তিনি লন্ডনে ফেরেন এবং বিমানবন্দর থেকে সরাসরি ডাউনিং স্ট্রিটে যান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা বৈঠকের পর পদত্যাগপত্র দেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী।
সেখানে তিনি স্বীকার করে নেন, ইসরায়েলে যেভাবে তিনি প্রভাবশালী বক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তা স্বচ্ছতার মানদণ্ডে পড়ে না। এ কারণে পদত্যাগপত্রে দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়, চলতি বছরের আগস্টে এক লবিস্টের সঙ্গে ইসরায়েল সফরে যান যুক্তরাজ্যের সদ্য সাবেক এই মন্ত্রী। সেখানে তিনি ১২টি গোপন বৈঠক করেছেন, যার একটিতে তার মুখোমুখি হয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর বুধবার উগান্ডা সফর বাতিল করে দেশে ফিরেন তিনি।
১৩ দিনের সফরকালে গোপন বৈঠকে গোলান উপত্যকায় ইসরায়েলের সেনাদের কাছে যুক্তরাজ্যের সাহায্যের অর্থ দিতে চেয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন প্রীতি।
যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির এই নেতার গোপন বৈঠকের আরো কিছু খবর পাওয়া গেছে। এর একটি হয়েছিল গত ৭ সেপ্টেম্বর। ওই দিন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে ইসরায়েলের জননিরাপত্তামন্ত্রী গিলাদ এরদানের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি। এর পর ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ইয়োভাল রটেমের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছিল তাঁর।
পদত্যাগপত্রে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনকে এসব বৈঠকের বিষয়ে না জানাতে পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন প্রীতি।
এর আগে, কথিত যৌন কেলেঙ্কারির জের ধরে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন। এরও আগে একই অভিযোগে দু’জন এমপিকে দল থেকে বরখাস্ত করে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি। এছাড়া, যৌন হয়রানির অভিযোগে তদন্ত চলছে উপ-প্রধানমন্ত্রী ডোমিয়ান গ্রিনসহ কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী ও এমপির বিরুদ্ধে। এমন প্রতিকূল সময়ে আরেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের গুরুতর অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র নেতৃত্বকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।