হঠাৎ রাখাইন সফরে সু চি
প্রকাশ | ০২ নভেম্বর ২০১৭, ২৩:১০
নতুন করে সহিংসতার দুই মাসের অধিক সময় পর হঠাৎ করেই রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনে গেলেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি।
আজ ২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় পরামর্শক সু চি একদিনের সফরে রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিটুয়ে এবং অন্যান্য শহর পরিদর্শন করার কথা বলা হয়।
সরকারের একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, সু চি বর্তমানে রাখাইনের সিটুয়ে-তে অবস্থান করছেন। এরপর তিনি মংডু এবং বুথিডং এলাকা সফর করবেন। এ দুটো এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেখান থেকে হাজার-হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের দুই ডজনের অধিক পুলিশ ও সেনাক্যাম্পে হামলার ঘটনা ঘটে। একে কেন্দ্র করে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্বিচারে নির্যাতন-হত্যা চালায়। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। প্রতিদিন নতুন করে বাংলাদেশ সীমান্তে এসে ভিড় করছে রোহিঙ্গা সদস্যরা। এ ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদি’ উদাহরণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ।
তবে কোনো ধরনের নির্যাতন-হত্যা-ধর্ষণের অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে আসছে দেশটির সেনাবাহিনী ও অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি।
রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় সারা বিশ্বেই সমালোচনার মুখে পড়েন নোবেল পুরস্কারজয়ী সু চি। প্রায় দেড় দশকের অধিক সময় গৃহবন্দি থাকা সু চি পাঁচ দশক ধরে দেশটির ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ক্ষমতা নেন দুই বছরের কম সময় আগে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, সেনাবাহিনীর দিক থেকে হুমকি আসতে পারে, এমন আশংকায় মিস সু চি তাদের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতে চান না।
গত বুধবার অং সান সু চি'র একজন মুখপাত্র অভিযোগ করেছেন, রাখাইন প্রদেশ থেকে যে লক্ষ লক্ষ মুসলিম গত দুমাসে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে গেছেন, তাদের প্রত্যাবাসনের কাজে বাংলাদেশের জন্যই দেরি হচ্ছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশ সারা বিশ্ব থেকে যে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছে, সে জন্যই তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ঢিলেমি করছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।