নারী ধর্ষণের ‘অনুমতি’ ইসরায়েলি সেনাদের!
প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০১৬, ১৩:০০
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর নতুন প্রধান ধর্মীয় নেতা (রাব্বি) কর্ণেল মোশে করিম সম্প্রতি যুদ্ধক্ষেত্রে নারীদের ধর্ষণের অনুমতি দিয়েছেন ইসরায়েলি সেনাদের। এমন সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের ফলে ফিলিস্তিনি নারী ধর্ষণ অনেক বেড়ে যেতে পারে। কারণ ইসরাইলের যুদ্ধ মূলত ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে। ধর্ষণের এই বৈধতা পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে ইসলাইলি সৈন্যরা।
‘ওয়াইনেট নিউজ’র বরাত দিয়ে ‘গালফ নিউজ’ সোমবার (১১ জুলাই) জানিয়েছে ওই ধর্মীয় নেতা বলেছেন, ‘অ-ইহুদি নারীদের ধর্ষণে মাধ্যমে যুদ্ধের সময় সেনারা তাদের জোশ এবং মনোবল চাঙ্গা রাখতে সক্ষম হবে।’
এদিকে তার এমন বক্তব্যের পরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে খোদ ইসরাইলে। দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটের এক ফিলিস্তিনি সদস্য তালেব আল সানাই বলেন, ‘কর্নেল করিমের কথায় প্রমাণ হয়ে গেছে আইএস এবং ইসরায়েলের সেনাদের চিন্তাভাবনা একই।’
গালফ নিউজকে তিনি বলেন, ‘প্রতিপক্ষের ব্যাপারে আইএসের পাশবিক ভাবনা এবং কর্মকাণ্ডের সাথে কিছু ইহুদির দারুণ মিল আছে।’
খবরে বলা হয়েছে, ‘ওই রাব্বি যুদ্ধের সময় সেনাদেরকে আকর্ষণীয় অ-ইহুদি নারীদের দিয়ে সেনাদের ‘খায়েশ’ মেটানোর অনুমতি দিয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে জয়ী হওয়ার জন্য সাত-পাচ না ভেবে মন যা চায় তাই কর। তিনি দাবি করেছেন যুদ্ধক্ষেত্রে এমন ‘ঘৃণিত’ কাজ করার অনুমতি তাদের ধর্মে দেওয়া হয়েছে।’
৫৯ বছর বয়সি কর্নেল মোশে করিম বিদায়ী প্রধান রাব্বি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাফি পেরেজের স্থালাভিষিক্ত হবেন। ৬ বছর দায়িত্ব পালন শেষে ব্রিগেডিয়ার রাফি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন।
এদিকে কর্নেল করিমের বক্তব্য খোদ ইসরায়েলেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দেশটির আইনজীবী এবং নারীবাদী সংগঠনগুলো তার নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে।
ইসরায়েলের সংসদ নেসেটে ফিলিস্তিনি সদস্য আইদা তুমা সিলমান বলেন, ‘আমি অ্যাটর্নি জেনারেলের সাথে কথা বলে করিমের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানাবো। নেসেটের সব নারী ও পুরুষ সদস্যদেরকে অনুরোধ করবো যেন তারা আমার দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করেন।’
ইসরায়েলের মেরেৎজ পার্টির প্রধান জেহাভা গেলন বলেন, কর্নেল করিম ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান রাব্বি হওয়ার যোগ্য নন। তার মন্তব্য ওই বাহিনীতে থাকা হাজার হাজার নারী সদস্যের জন্য অপমানজনক। এমন মন্তব্যে নারীদেরকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।
তিনি কর্নেল করিমের বক্তব্যকে সাম্প্রদায়িক এবং সহিংস বলেও উল্লেখ করেছেন।
নেসেটের ফিলিস্তিনি সদস্য তালেব আল সানাই বলেন, ‘কর্নেল করিমের কথায় প্রমাণ হয়ে গেছে আইএস এবং ইসরায়েলের সেনাদের চিন্তাভাবনা একই। প্রতিপক্ষের ব্যাপারে আইএসের পাশবিক ভাবনা এবং কর্মকাণ্ডের সাথে কিছু ইহুদির দারুণ মিল আছে।’
তিনি বলেন, কর্নেল করিম ইহুদি ধর্মের নামে ধর্ষণকে জায়েজ করেছেন। যখন তার মতো একজন সিনিয়র ধর্মীয় নেতা এমন কথা বলেন তখন তারা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে।
ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি আইন প্রণেতারা অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়ে অবিলম্বে ওই রাব্বির নিয়োগের আদেশ বাতিলের দাবি জানানো হবে বলে জানান তালেব আল সানাই।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি এমন চরমপন্থি ধর্মীয় নেতাদের ফতোয়ার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের মধ্য থেকেই প্রতিরোধ গড়ে উঠবে।
সূত্র: অর্থসূচক