রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভাষণে সু চি
‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে’
প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:০৯
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত গণহত্যা ও সহিংসতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।
১২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। তবে কী পদ্ধতিতে তাদের ফেরত নেওয়া হবে এ বিষয়ে সু চি কোনো সদুত্তর দেননি। যদিও রোহিঙ্গা ফেরাতে ১৯৯২ সালের ঘোষণাকে ভিত্তি করার কথা ইতোপূর্বে বলেছে সু চির দফতর, পাশাপাশি যাচাই করার কথাও বলা হয়েছে। এ ভাষণেও সু চি রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা বলে আখ্যায়িত না করে কৌশলে তিনি মিয়ানমারে ঐক্যের আহবান জানান। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকার ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ চালাচ্ছে বলে জাতিসংঘ যে অভিযোগ করেছে সে বিষয়েও তিনি কিছু উল্লেখ করেননি।
ভাষণে সু চি বলেন, সহিংসতা কবলিত রাখাইন রাজ্যের জন্য আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় সহযোগীদের মধ্যে সমন্বয় সাধনে ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি তার ভাষণে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনার পর তাদের পুনর্বাসনের প্রয়োজন হবে। তবে কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে তা করা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি। ‘ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজ ফর হিউম্যানিটেরিয়ান এসিসট্যান্স, রিসেটেলমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট ইন রাখাইন’ নামের এই কমিটির দিক নির্দেশনায় নিজেই থাকার অঙ্গীকার করেন। এই কমিটি রাখাইন রাজ্যকে শান্তিপূর্ণ এবং উন্নত রাজ্যে রূপান্তর করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সু চি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের দেশের উচিত যা করা প্রয়োজন তা চালিয়ে যাওয়া। অধিকন্তু তা করতে হবে সঠিক, সাহসিকতা ও কার্যকরভাবে। সমালোচনা ও অভিযোগের জবাব না দিয়ে আমাদের পদক্ষেপ ও কাজ দিয়ে বিশ্বকে দেখিয়ে দেব।
২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার বিষয়ে দীর্ঘদিন নীরব থাকার পর ১৯ সেপ্টেম্বর ভাষণ দিয়েছিলেন সু চি। ওই ভাষণে ৩০টি পুলিশ চেকপোস্ট আর একটি রেজিমেন্টাল হেড কোয়ার্টারে সন্ত্রাসী হামলার জন্য রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি এবং এর সমর্থকদের দায়ী করে আইনের আওতায় নেওয়ার হুমকি দেন। সেই বক্তব্যের সমালোচনায় অ্যামনেস্টি বলেছিল, বালুতে মুখ গুঁজে আছেন তিনি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তার বিরুদ্ধে এনেছিল সেনাবাহিনীর দমনপীড়ন আড়ালের অভিযোগ।
১৯ সেপ্টেম্বর দেওয়া ভাষণে সু চি দাবি করেছিলেন, রাখাইনে সেনা অভিযান শেষ হয়ে গেছে। সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও রোহিঙ্গাদের নিয়ে কিছু বলেননি। শুধু জানিয়েছিলেন, কেন বাংলাদেশে মুসলমানরা পালিয়ে যাচ্ছে তা অনুসন্ধান করতে হবে।