‘১৮ বছরের কম বয়সী স্ত্রীর সঙ্গে যৌনমিলন হবে ধর্ষণ’
প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:০১
১৮ বছরের কম বয়সের নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ বলে গন্য হবে বলে ১১ অক্টোবর (বুধবার) ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের ফলে এখন থেকে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করলে তা হবে ধর্ষণের সামিল।
সুপ্রিম কোর্ট এক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় উল্লেখিত ব্যতিক্রম খারিজ করে দিয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, ১৫ বছরের বেশি বয়সের স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ধর্ষণের আওতার বাইরে রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ধর্ষণ আইনে যে ব্যতিক্রম রয়েছে তা বৈষম্যমূলক ও একতরফা। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সের বিবাহিতা মেয়েদের এর বাইরে রাখাটা অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছে সর্বোচ্চ আদালত। কারণ, যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়স ১৮। এক্ষেত্রে বিবাহিতা নাবালিকাদের ধর্ষণের আওতার বাইরে রাখা যায় না।
রায়ে আদালত বলেন, ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী যেসব কিশোরী ও তরুণীর বিয়ে এরই মধ্যে হয়ে গেছে, তাদের এ রায়ের বাইরে রাখা অসাংবিধানিক। কোনো পুরুষ যদি ১৮ বছরের কম বয়সী স্ত্রীর সঙ্গে যৌনমিলন করে, তবে সেটি হবে অপরাধ। কম বয়সী স্ত্রী এক বছর সময়ের মধ্যে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবে।’
সু্প্রিম কোর্ট বাল্য বিবাহ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে সামাজিক ন্যায় আইনগুলি প্রণয়ন করা হয়েছিল সেই উদ্দেশ্য অনুযায়ী সেগুলির রূপায়ন হচ্ছে না।
ভারতীয় দণ্ডবিধি তথা আইপিসি অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো মেয়ের সঙ্গে সম্মতির ভিত্তিতে অথবা সম্মতি ছাড়া কোনো পুরুষের যৌনমিলন অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তবে ওই মেয়েটি কারো স্ত্রী হলে এবং তার বয়স ১৫ বছরের কম না হলে, সেটি অপরাধ হবে না। তবে আজ আদালতের রায়ের পর সেই বিধান অকার্যকর হয়ে গেল।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ভারতের মানবাধিকার সংগঠন ‘ইনডিপেনডেন্ট থট’ ১৮ বছরের কম বয়সীদের বিয়ে বন্ধ নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে একটি আবেদন করেছিল। আবেদনে তারা উল্লেখ করেছিল, বিয়ের অনুপযুক্ত মেয়ে ও কম বয়সে বিয়ে হওয়া মেয়েদের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক করা নিয়ে আইনে স্ববিরোধিতা আছে। আদালত সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন।
ভারতে শিশুদের যৌন অপরাধ থেকে সুরক্ষা আইন (পিওসিএসও) অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সীরা শিশু হিসেবে গণ্য হয়।
৩৭৫ ধারায় নাবালিকা স্ত্রীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণের আওতার বাইরে রাখার বিষয়টি অবৈধ ঘোষণার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।