রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ প্রস্তাব
প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৫:২০ | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৫:৪৬
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি সব ধরণের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করছি। এ বিষয়ে আমাদের সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলে।’
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে ওই পাঁচদফা প্রস্তাব তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, বাংলাদেশ সময় ২২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) ভোর পৌনে ছয়টায় ভাষণ শুরু করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহবান জানাচ্ছি। এ প্রসঙ্গে আমি কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করছি:
প্রথমত, অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা;
দ্বিতীয়ত, অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল (Fact Finding Mission) প্রেরণ করা;
তৃতীয়ত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় (safe zones) গড়ে তোলা;
চতুর্থত, রাখাইন রাজ্য হতে জোরপূর্বক বিতাড়িত সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা;
পঞ্চমত, কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ এই মুহূর্তে ৮ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা সকলেই জানেন যে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান নৃশংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থার ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। এই নৃশংসতার হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। আন্তর্জাতিক আভিবাসন সংস্থার তথ্যমতে গত তিন সপ্তাহে চার লাখ ত্রিশ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া ঠেকানোর জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমানা বরাবর স্থলমাইন পুঁতে রাখছে।