ধর্ষণ মামলায় রাম রহিমের ২০ বছরের কারাদণ্ড
প্রকাশ | ২৮ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৪৭ | আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০১৭, ২৩:৪০
দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের দায়ে ভারতের হরিয়ানার ধর্মগুরু 'রকস্টার বাবা' গুরমিত রাম রহিম সিংকে ১০ বছর করে মোট ২০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এরই সাথে দুটি মামলার প্রতিটির জন্য ১৫ লাখ রুপি করে জরিমানার আদেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নির্যাতিত প্রত্যেকে ১৪ লাখ রুপি করে পাবেন। খবর এনডিটিভির।
গত শুক্রবার তাকে এই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় রোহতক শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের সানোরিয়া কারাগারে।
আজ ২৮ আগস্ট (সোমবার) স্থানীয় সময় বেলা ২টা ২৫ মিনিটে হেলিকপ্টারে করে সানোরিয়া কারাগারে উড়ে যান সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) বিশেষ আদালতের বিচারক জগদীপ সিংহ। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কারাগারেই অস্থায়ী আদালত পরিচালনা করা হয়। এখনো কারাগারটি ঘিরে রেখেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
খবরে বলা হয়, শুনানির শুরুতেই যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য বাদী ও বিবাদী দুই পক্ষকে ১০ মিনিট করে সময় বেঁধে দেন বিচারক। এ সময় বাদী পক্ষ রাম রহিমের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। অন্যদিকে রাম রহিমের আইনজীবী দাবি করেন রাম-রহিম একজন সমাজকর্মী। তিনি জনগণের কল্যাণে কাজ করেন। তাই বিচারক তার অপরাধকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখতে পারেন। একপর্যায়ে রাম রহিম কান্না করে বিচারকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণার পর শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত হাঙ্গামায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিপূরণে রাম রহিমের ডেরা সচ সউদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, দুই নারী শিষ্যকে ধর্ষণের অভিযোগে গত ২৫ আগস্ট (শুক্রবার) সিবিআইয়ের একটি বিশেষ আদালত রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এরপরই তার ভক্তরা তাণ্ডব চালায়। হরিয়ানার পঞ্চকুলায় ভক্তদের লাগামছাড়া সহিংসতায় নিহত হন ৩৮ জন। জখম হন ২৫০ জনেরও বেশি।
শুক্রবারের এই ঘটনার পর রোহতক কারাগারের আশপাশে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কারাগারের চারপাশে অবস্থান নিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং হরিয়ানা পুলিশ। ধর্মগুরুর ভক্তরা যাতে কারাগারের আশপাশে যেতে না পারে, সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
হরিয়ানার পঞ্চকুলা ও সিরসায় কারফিউ বলবৎ রয়েছে। দিল্লির ১১টি, উত্তর প্রদেশের নয়টি ও রাজস্থানের একটি জেলায় বড় ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া হরিয়ানার সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মুঠোফোনের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। রোহতকের পুলিশ কোনো ধরনের তাণ্ডবের ইঙ্গিত পেলেই গুলি করা হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে।
এখনো সিরসায় রাম রহিমের প্রধান ডেরা সচ সউদে ৩০ হাজার ভক্ত অবস্থান করছে। তারা আজকের রায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। এই ভক্তরা যাতে নতুন করে কোনো সহিংসতা করতে না পারে, সে জন্যে সেনা মোতায়েন অব্যাহত রাখা হয়েছে।