সমালোচনার মুখে ইরানে ৩ নারী ভাইস-প্রেসিডেন্ট নিয়োগ
প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০১৭, ০২:৪১
অবশেষে ইরানে ক্ষমতাসীন জোটের উদার সংস্কারবাদীদের তুমুল সমালোচনার মুখে বাধ্য হয়ে ৩ জন নারীকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ৯ আগস্ট (বুধবার) দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ভাইস প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি মানবাধিকার বিষয়ক সহযোগী নিয়োগ দিয়েছেন।
বর্তমানে ১২ জন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত তিন নারী হলেন মাসুমেহ এবতেকার, লায়া জোনেইদি ও শাহিনদখত মৌলাভের্দি। এদের মধ্যে মাসুমেহ এবতেকারকে পরিবার ও নারী বিষয়ক, লায়া জোনেইদিকে আইন বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া শাহিনদোখত মোওলাভেরদিকে প্রেসিডেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক সহায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। শাহিনদখত নাগরিক অধিকার দপ্তর সামলাবেন।
এর আগে গত ৮ আগস্ট (মঙ্গলবার) দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার পর মন্ত্রিসভা গঠন করেন উদারপন্থি মডারেশন ও ডেভেলপমেন্ট পার্টির নেতা রুহানি।। কিন্তু ঘোষিত মন্ত্রিসভায় কোনো নারী নেই মিত্র দলগুলোর নেতাদের এমন সমালোচনার মুখোমুখি হন রুহানি। মুখে সংস্কারের কথা বললেও প্রেসিডেন্ট ধর্মীয় প্রাতিষ্ঠানিকতার কাছে হার মেনেছেন এমন অভিযোগও করেন সমালোচকরা।
রুহানির গত মেয়াদের সরকারের সময়েও ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকা মোওলাভেরদি বলেন, "রুহানির সব পুরুষের মন্ত্রিসভা এটা প্রদর্শন করে যে ইরান নারী ক্ষমতায়নে খুব অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি"।
এরই প্রেক্ষিতে ৯ আগস্ট (বুধবার) প্রেসিডেন্ট এই নিয়োগের আদেশ জারি করেন।
ইরানে সাধারণত সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীর অনুমোদন নিয়েই অধ্যাদেশ জারি ও নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে থাকেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। তাই ইরানে আইনসভার সদস্যরা মনোনীত মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিষয়ে বিরোধিতা করেন না। তবে এই তিন নারী ভাইস প্রেসিডেন্টও খামেনীর অনুমোদনে নিয়োগ পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে এই ব্যাপারে সংসদে তাদের চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে না।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর ইরানে এখন পর্যন্ত কেবল একজন নারীই মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। মারজিয়াহ দাস্তজের্দি নামে ওই নারী রাজনীতিক ২০০৯-২০১৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
এবার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত তিনজন রুহানির আগের সরকারেও নিয়োগ পেয়েছিলেন। এর মধ্যে মাসুমেহই আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত রাজনীতিক। ১৯৭৯ সালের ইরান-বিপ্লব পরবর্তী মার্কিন দূতাবাস ঘেরাওয়ের সময় সৃষ্ট জিম্মি সংকটে মাসুমেহ আন্দোলনকারীদের মুখপাত্রের ভূমিকায় ছিলেন। তিনি রুহানির আগের সরকারে পরিবেশ দপ্তরের দায়িত্ব পালন করেন।
রুহানির দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় এখনো আরও কিছু ডেপুটি পর্যায়ের পদ খালি আছে। তবে তিন নারীকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আনার পর রুহানি আরও কোনো নারীকে রাজনীতিতে আনবেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।