বর্ণবাদী মন্তব্য করায় ব্রিটিশ এমপিকে বহিষ্কার
প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০১৭, ১৮:০২
যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসা (ব্রেক্সিট) নিয়ে আয়োজিত মুক্ত আলোচনায় বর্ণবাদী মন্তব্য করায় ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) অ্যানি মেরি মরিসকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় ১০ জুলাই (সোমবার) দুপুরে লন্ডনভিত্তিক নীতি-গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পলিটেইয়া’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মন্তব্যের জন্য মরিসকে বহিষ্কার করা হয়।
যুক্তরাজ্যের নিউটন অ্যাবটন সংসদীয় এলাকার এমপি অ্যানি মরিস। তাঁকে কখন বহিষ্কার করা হয়েছে, তা জানা যায়নি।
পলিটেইয়ার আলোচনায় ব্রেক্সিটের পক্ষে গণভোটের পর দুই বছর হতে চললেও ইইউর সঙ্গে এখনো কোনো চুক্তি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মরিস। এ সময় তিনি বর্ণবাদী একটি প্রবাদ (নিগার ইন দ্য উডপাইল তথা কাঠের স্তূপে নিগ্রো) ব্যবহার করেন। আর এর জেরেই বহিষ্কার করা হয় তাঁকে।
আলোচনায় মরিস বলেন, মাত্র ৭ শতাংশ অর্থনৈতিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে ব্রেক্সিটের প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি, অনেকেই আমার এ কথাকে চ্যালেঞ্জ করবেন। তাঁদের কাছে অনুরোধ হলো, আপনারা এ বিষয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখবেন। এটা হতাশ হওয়ার মতো কোনো বিষয় নয়।’
এর কিছুক্ষণ পর ক্ষোভ প্রকাশ করে মরিস বলেন, ব্রেক্সিটের দুই বছর হয়ে গেলেও এখনো এ নিয়ে কোনো চুক্তি হয়নি। এটা অনেকটা ‘কাঠে লুকানো নিগ্রোদের’ (নিগার ইন দ্য উড) মতো।
‘নিগার ইন দ্য উড’ প্রবাদটি ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে কৃষ্ণাঙ্গ দাসদের বোঝাতে ব্যবহার করা হতো। এই প্রবাদ ব্যবহারের পর থেকেই মরিসকে বহিষ্কারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মেকে চাপ দেন বিরোধীরা। এর পরপরই কনজারভেটিভ পার্টির এক চিঠিতে অ্যানিকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মরিস বিবিসিকে বলেন, ‘এই মন্তব্য সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। এই অপরাধের জন্য আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি।’
বহিষ্কারের ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী টেরিজা বলেন, ‘আমি তাঁর এ বক্তব্য শুনে মর্মাহত। এ ভাষা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি চিফ হুইপকে তাৎক্ষণিকভাবে ওই সদস্যকে বরখাস্ত করতে বলেছি। রাজনীতিতে এ ধরনের মন্তব্যের কোনো জায়গা নেই, এমনকি আজকের সমাজেও নয়।’
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রিন পার্টির নেতা করোলিন লুকাস অ্যানিকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে বলেন, ‘হাউস অব কমন্সে তাঁর কোনো জায়গা নেই।’
লেবার পার্টির এমপি চুকা উমিন বলেন, তিনি নির্বাক। মরিসের এ আচরণ খুবই হতাশাজনক।