নারীর গৃহস্থালি কাজের মূল্যায়নে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বান
প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০১:২৯
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সূচক ও মানব উন্নয়ন সূচক ইতিবাচক। এ উন্নয়নের সুফল পেতে হলে সমতা ও ন্যায্যতার সাথে উন্নয়ন হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সকল প্রকার অসমতা দূর করতে হবে। বিশেষ করে নারীদের পিছিয়ে রেখে সমাজ বা রাষ্ট্রের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। গৃহস্থালি কাজে নারী যে ভূমিকা রাখে, তা পারিবারিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা জাতীয় অর্থনীতিতে মূলায়ন করা হলে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ এবং সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। আজ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, বিকাল ৪ টায় একুশে বই মেলায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর উদ্যোগে ‘সামাজিক ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে গৃহস্থালি কাজে নারীর মূল্যায়ন করা হোক” শীর্ষক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
ক্যাম্পেইনে বক্তারা বলেন, ২০০৭ সালের জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দিনটিকে বিশ্ব সামাজিক ন্যায়বিচার দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। এ বছরের প্রতিপাদ্যে মানসম্মত কাজের মাধ্যমে সংঘাত প্রতিরোধ ও টেকসই শান্তি নিশ্চিত করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দরিদ্রতা দূরীকরণ, নারীসহ অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, উন্নয়নে নারী-পুরুষের ন্যায্যতাভিত্তিক অংশগ্রহণ ও সবার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই বিশ্ব সামাজিক ন্যায়বিচার দিবসের প্রধান লক্ষ্য।
বক্তারা বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাকে অন্তর্নিহিত মূলনীতি হিসাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ক্ষমতার বিচারে লিঙ্গ, বয়স, বর্ণ, ধর্ম এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে। বিশেষ করে পরিবার ও সমাজের নারীর মর্যাদা নিশ্চিত করা। এর জন্য প্রয়োজন সকলের ইচ্ছা ও আন্তরিকতা। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর এক গবেষণায় দেখা যায়, নারীরা গৃহে প্রতিদিন গড়ে ১৬ ঘন্টায় ৪৫ রকমের কাজ করেন। ২০১৩ সালে মাঝারি মানের সরকারি কর্মকর্তার বেতনের সঙ্গে বিশ্লেষণে (১৬ ঘন্টা সময়কে ৮ ঘন্টা ধরা হয়েছে) দেখা গেছে, ২০১২ সালে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী নারীদের গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য ২২৭.৯৩ থেকে ২৫৮.৮২ বিলিয়ন ডলার (১৮২৩৪.৮১ বিলিয়ন টাকা থেকে ২০,৭০,৫.৬ বিলিয়ন টাকা)। যা বাংলাদেশের জিডিপির দ্বিগুণেরও বেশি। উল্লেখ্য, ২০১২ সালের জিডিপি’র পরিমাণ ছিল ১১৮.৭ বিলিয়ন ডলার। নারীর এই অবদান জাতীয় অর্থনীতিতে অন্তর্ভূক্ত করা হলে একদিকে নারীর নীরব শ্রমের গুরুত্ব প্রকাশ পাবে। অন্যদিকে পরিবার ও সমাজের নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। যা সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
উক্ত ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবির, সহকারী এডভোকেসি অফিসার তানজিদা হক, বাঁচতে শেখায় নারীর নির্বাহী পরিচালক ফিরোজা বেগম, স্বপ্নের সিঁড়ি এর সালমা বেগম প্রমুখ।