মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী গৃহবধু ফারজানা
প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১৭:৪১
মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ঝিনাইদহের গৃহবধু ফারজানা ববি। নিজে হয়েছেন স্বাবলম্বী, পেয়েছেন বিভিন্ন পুরষ্কার। স্বল্প পুঁজিতে ও নামমাত্র শ্রমে ওই মাশরুম চাষে সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন মাশরুম চাষে উৎসাহী হয়ে উঠছেন।
জানা যায়, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ২য় সন্তান ফারজানা ববি। ১৯৯৯ সালে এইচ এস সি পাশের পরেই পরিবার থেকে তাকে বিয়ে দিয়ে দেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা স্বামী আলী আজম মৃধার সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকতো। স্বামী যা উপার্জন করতেন তা দিয়ে কোনমত সংসার চলতো। স্বামীর আয়ের পাশাপাশি সংসার আরও একটু ভালো রাখতে তিনি করেছেন টেইলারিং, টিউশন।
২০১২ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সহযোগীতায় সাভার থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে স্বামীর সহযোগিতায় শুরু করেন মাশরুম চাষ। দেখেন সফলতার মুখ। সংসারে আসে স্বচ্ছলতা।
২০১৩ সালে ঝিনাইদহ কৃষি মেলায়, ২০১৪ সালে মহিলা অধিদপ্তরের আয়োজিত মেলায় এবং ২০১৫ সালে ঢাকা কৃষি মেলায় অংশ নিয়ে অর্জন করেন পুরস্কার। ২০১৪ সালে ভিয়েতনামে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। যার মাধ্যমে মাশরুম চাষে আরও সফলতা অর্জন করা শুরু করেন তিনি।
বর্তমানে তার মাসিক আয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তার বাড়ীতে কাজ করছেন ওই এলাকার ১০ জন বেকার মানুষ। বর্তমানে ফারজানা ববির মাশরুম খামারে ৫ হাজার প্যাকেট রয়েছে। যার থেকে প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে ৮০ থেকে ১’শ কেজি মাশরুম। এই মাশরুম যাচ্ছে ঢাকা, কুমিল্লা, যশোর, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
লাভের টাকা দিয়ে জমি কিনেছেন ফারজানা এবং করেছেন বাড়ি। সেই টাকা দিয়ে নতুন করে শুরু করেছেন গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প। ফারজানা ববির এই সফলতা দেখে ওই গ্রামে অনেকেই মাশরুম চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।
ওই গ্রামের শারমিন আক্তার নামের এক গৃহবধু ফারজানা ববির পরামর্শ নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেন। তিনিও এখন স্বাবলম্বী। স্বল্প সুদে ঋণ পেলে মাশরুম চাষ প্রকল্প আরও বৃদ্ধি করতে পারবেন বলে আশা তার।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, প্রযুক্তিগত ভাবে মাশরুম উৎপাদনের জন্য ফারজানা ববিকে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে তিনি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাশরুম উৎপাদন করছেন এবং সফলতাও অর্জন করেছেন।