মজুরিবৈষম্য কমছে নারী ও পুরুষ পোশাকশ্রমিকের
প্রকাশ | ০৪ মার্চ ২০১৮, ১৮:৫৩
তৈরি পোশাকশিল্পে নারী ও পুরুষ শ্রমিকের মজুরি বৈষম্য কমছে। বর্তমানে পোশাক খাতে কর্মরত পুরুষ শ্রমিকেরা গড়ে ৭ হাজার ২৭০ টাকা ও নারী শ্রমিকেরা ৭ হাজার ৫৮ টাকা মজুরি পান। নারী ও পুরুষ শ্রমিকের গত মজুরি ব্যবধান প্রায় ৩ শতাংশ।
রানা প্লাজা ধসের পরও পোশাকশিল্পে নতুন বিনিয়োগ থেমে থাকেনি। বর্তমানে যেসব পোশাক কারখানা আছে, তার ১৮ শতাংশই ২০১৩-১৬ সালের মধ্যে স্থাপিত হয়েছে। এতে নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। আবার ছোট ছোট অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ায় চাকরি হারিয়েছেন অনেক পোশাকশ্রমিক।
দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় ৩ মার্চ (শনিবার) গবেষণাটির প্রাথমিক তথ্য তুলে ধরে হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান, বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক শ্রমসচিব মিকাইল শিপার, শ্রমিকনেতা বাবুল আক্তার, শামছুন্নাহার ভূঁইয়া প্রমুখ।
ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের ১৯৩টি পোশাক কারখানা ও ২ হাজার ২৭০ শ্রমিকের ওপর জরিপ চালিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের পর পোশাকশিল্পে অর্থনৈতিক চেয়ে সামাজিক অগ্রায়ণ (অগ্রগতি) হয়েছে। পোশাকশিল্পকে টেকসই করতে হলে এই অসমতা দূর করতে হবে।’
সিপিডির গবেষণায় উঠে এসেছে, ১৬ শতাংশ পোশাক কারখানায় বিদেশি কর্মকর্তা কাজ করেন। সংখ্যার হিসাবে প্রতি কারখানায় গড়ে ৪ জন। বিদেশি কর্মকর্তাদের ৩৭ দশমিক ৩ শতাংশ উৎপাদন পরিকল্পনা, ২০ দশমিক ১ শতাংশ মার্চেন্ডাইজিং, ১১ দশমিক ৯ শতাংশ মান নিশ্চিত এবং ৮ দশমিক ২ শতাংশ ওয়াশিং বিভাগে কাজ করেন।
গবেষণা আরও উঠে এসেছে, ৯১ শতাংশ পোশাক কারখানাতেই ওয়ার্কার পার্টিসিপেশন কমিটি (ডব্লিউপিসি) আছে। অন্যদিকে ট্রেড ইউনিয়ন আছে মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ কারখানায়। এ ছাড়া সাবকন্ট্রাক্টিং বা ঠিকা কাজ করা কারখানার ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কমে গেছে। বর্তমানে প্রায় ১৭ শতাংশ কারখানা আংশিক বা পুরোপুরি সাবকন্ট্রাক্টিং।
অধ্যাপক রেহমান সোবাহান পোশাকশিল্পের মালিকদের উনিশ শতকের ধ্যানধারণা ছেড়ে একুশ শতকের মডেলে কারখানা পরিচালনা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও ভালো মজুরি দিয়ে উৎপাদনক্ষমতা বাড়ান। তাঁদের মুনাফার ভাগ দিন। সরাসরি সুফল পেলে শ্রমিকেরা কারখানাটিকে নিজের মনে করবেন। তখন টেকসই উন্নয়ন হবে।
সূত্র: প্রথম আলো