ফের উন্মুক্ত হচ্ছে বান্দরবানের স্বর্ণমন্দির
প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৬, ১৩:১৯
পর্যটক ও দর্শনার্থীদের বান্দরবানে অবস্থিত স্বর্ণজাদি বা স্বর্ণমন্দির আবারও দর্শনের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। মন্দিরটি সোমবার (১৪ নভেম্বর)সকাল ৮টায় পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে এ মন্দিরে প্রায় ৯ মাস পর পর্যটক ও দর্শনার্থীদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলো। তবে বুধবার (১৬ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে আগের নিয়মে পর্যটকদের জন্য স্বর্ণমন্দির উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট ও পর্যটকদের হাতে ভক্তদের নানা হয়রানির ঘটনায় মন্দির কর্তৃপক্ষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি এই মন্দিরে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, আগামীকাল ১৬ নভেম্বর সকাল থেকে স্বর্ণজাদিটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। রবিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের বাসভবনে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে স্বর্ণজাদির প্রতিষ্ঠাতা ধর্মগুরু জোত মহাথেরো (উছহ্লা ভান্তে) আবার পর্যটকদের জন্য মন্দিরটি খুলে দিতে সম্মত হয়েছেন। বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও জেলা দায়রা জজ শফিকুর রহমান, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপারসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের জানান, মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা গুরুভান্তেকে মন্দিরটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে বান্দরবানের স্বর্ণজাদিটি খুবই প্রিয় স্থান। কিন্তু মন্দিরটি বন্ধ থাকায় পর্যটকরা ভ্রমণে উৎসাহ পাচ্ছিলেন না। পর্যটকদের কথা চিন্তা করেই গুরুভান্তেকে মন্দিরটি উন্মুক্ত করে দেয়ার অনুরোধ করা হলে তিনি সম্মতি দেন।
মন্দির কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি বাচা মং মারমা জানান, স্বর্ণমন্দিরটি পর্যটকদের জন্য সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকবে। মন্দিরের পবিত্রতা যাতে নষ্ট না হয় সেই সঙ্গে পূজার্থী ও ভক্তরা যাতে পর্যটকদের হাতে হয়রানির শিকার না হন সেদিকে নজর রাখা হবে।
এ প্রসঙ্গে বান্দরবানের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, পুলিশের নিয়মিত পাহারার ব্যবস্থ রেখে স্বর্ণমন্দির পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়মিত মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করে পর্যটকদের মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় নেতা জোত মাহাথেরো ২০০০ সালে বান্দরবান শহরের বালাঘাটার কাছে পুলপাড়া এলাকায় পাহাড়ের ওপর স্বর্ণজাদিটি নির্মাণ করেন। এটি বৌদ্ধ ধাতু জাদি নামেও বেশ পরিচিত। মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ মন্দিরগুলোর আদলে এই স্বর্ণজাদিটি তৈরি করা হয়। মন্দিরটির রং সোনালি হওয়ায় এটি পর্যটকদের কাছে স্বর্ণমন্দির নামেও পরচিতি। দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক বান্দরবানের দর্শনীয় এই স্থানটি দেখতে ভিড় জমান। তবে বেশ কিছু পর্যটক মন্দিরে জুতা নিয়ে প্রবেশ করায় এবং মূর্তি নিয়ে নানা ভঙ্গিতে ছবি তুলে মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করায় কর্তৃপক্ষ স্বর্ণমন্দিরটি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।