ঘুরে আসুন ভিমরুলির ভাসমান পেয়ারা বাজারে

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০১৮, ১৩:৫১

অনলাইন ডেস্ক

নৌকা দিয়ে ঘুরতে ভালোবাসলে ভ্রমনের খাতায় নাম লিখান বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম ভাসমান পেয়ারা বাজারের।

বরিশালের তিন জেলা ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ে পেয়ারা বাগানটি বিস্তৃত। ২৬টি গ্রামের প্রায় ৩১ হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে এই পেয়ারা বাগান প্রাণ পায় পেয়ারার মৌসুমে। বরিশালের ভিমরুলি গ্রামের আঁকাবাঁকা ছোট্ট খালজুড়ে সপ্তাহের প্রতিদিনই আসে পেয়ারা বোঝাই শত শত নৌকা। দেখতে সবগুলো নৌকা একইরকম বলে এক  অন্যরকম আনন্দ দেয়। এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। সবচেয়ে ব্যস্ত সময় দুপর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা।

যেভাবে যাবেন :

সদরঘাট থেকে প্রতিদিন রাত ৮টায় বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায় অনেকগুলো বিলাসবহুল লঞ্চ। এর জন্য আপনাকে ভাড়া গুনতে হবে ভিআইপি কেবিনের জন্য ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকা, সেমি ভিআইপি কেবিন ৪০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা, ফ্যামিলি কেবিন ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা, ডাবল কেবিন ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং ডেকে জনপ্রতি ২৫৫ টাকা। পূর্ণিমা দেখে যদি যাত্রা করেন তবে পরিস্কার আকাশে মধ্য নদীতে পূর্ণিমা বিলাস হবে বোনাস।

সকাল ৭টায় পৌঁছে যাবেন বরিশাল। লেগুনা ঠিক করে ফেলুন স্বরূপকাঠি যাওয়ার জন্য। এক লেগুনায় ১৪ জন যাওয়া যায়। রিজার্ভ ভাড়া পড়বে ৪০০-৫০০ টাকা। ছোট গ্রুপ সিএনজি টাইপ টেম্পো ভাড়া করে নিন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দিয়ে। প্রায় দেড় ঘন্টা জার্নি শেষে স্বরূপকাঠি পৌঁছে যাবেন। সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করে নিন সারা দিনের জন্য। ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। আকারভেদে প্রতিটি নৌকায় ১৫ থেকে ২০ জন মানুষ ধরে।

এছাড়া ঢাকার গাবতলী থেকে সাকুরা পরিবহনের এসি বাসও যায় বরিশাল। ভাড়া ৮০০ টাকা। এ ছাড়া ‘হানিফ’, ‘ঈগল’, ‘সুরভী’ ও ‘সাকুরা’ পরিবহনের নন-এসি বাসও যায়, ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। এ ছাড়া ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বরিশাল যাওয়ার জন্য রয়েছে ‘সুগন্ধা’ পরিবহনের বাস।

ঘোরাঘুরি :

ট্রলারে একটি ছাউনি লাগিয়ে সোজা চলে যান ভিমরুলি বাজারে। সেখানে ঘন্টাখানেক ঘুরে দুপুর ১ টার দিকে সরে পড়ুন। এরপর চলে যান কুড়িয়ানা বাজারে। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে বোটে উঠুন। এবার বোটওয়ালাকে বলুন বানারীপাড়া/ নেছারাবাদ নামিয়ে দিতে। দুই জায়গাতেই বাস বা অটো পাবেন বরিশালের। বাসে বা অটোতে করে গুঠিয়া নেমে যান। ঘুরে দেখুন গুঠিয়া মসজিদ। এরপর অটোতে দুর্গাসাগর দীঘি।

কোথায় খাবেন :

কুড়িয়ানা বাজারে সকাল সন্ধ্যা হোটেল নামে একটি দোকান আছে। এর রান্না খুবই ভালো। বড় গ্রুপ না হলে আগে অর্ডার দেয়ার দরকার নেই। বড় গ্রুপ হলে আগে জানিয়ে দেবেন।

কোথায় থাকবেন :

এই ট্যুরে থাকার প্রয়োজন নেই। রাতেই আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে আসতে পারেন। থাকতে চাইলে বরিশাল শহরে সাধারণ মানের হোটেলই একমাত্র ভরসা। ভালো কোনো হোটেলে থাকতে চাইলে যেতে হবে বরিশাল সদরে।


সতর্কতা :

যেহেতু পুরো ভ্রমণটা নদীকেন্দ্রিক এবং বর্ষায় ঘুরতে গেলে অবশ্যই কিছু সতর্কতা জরুরী। অবশ্যই রেইনকোট, লাইফ জ্যাকেট নিয়ে আসবেন। মোবাইল টাকা-পয়সা রাখার জন্য ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ বা পলিথিন ব্যবহার করবেন। প্রয়োজনীয় ওষুধ সাথে রাখবেন। যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে ভ্রমনের পরিবেশ নষ্ট করবেন না।