পাহাড়ি কন্যা শিলং (২য় পর্ব)
প্রকাশ | ০৬ মে ২০১৮, ২৩:১১ | আপডেট: ০৬ মে ২০১৮, ২৩:১৬
তৃতীয় দিন আমরা মেঘালয় ট্যুরিজম এর সাথে ঘুরেছি, ভাড়া জন প্রতি ৩৫০ রুপি। আজকের স্থানগুলো- মাওডাক ভ্যালী (Mawkdok Valley), চেরাপুঞ্জি, সেভেন সিস্টারস ফলস, মৌসমী কেভ (Mawsmai Cave), নহকালিকাই (Nohkalikai Falls), বোটানিক্যাল গার্ডেন। যেটার বুকিং আমরা প্রথম দিন এসেই করে রেখেছিলাম। সকালে লুচি-সবজি দিয়ে নাস্তা করে আমরা তাদের অফিসে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। বাস এলো। মজার বিষয় ছিলো ওই দিন বাসের অর্ধেকেরও বেশী বাঙালি ছিলো, কেউ কলকাতায় থাকে, কেউ পুনেতে। বর্ষার মৌসুম না থাকায় আমরা চেরাপুঞ্জি আর সেভেন সিস্টারস ফলস এ পানি পাইনি। অবশ্য বর্ষার মৌসুমে Mawsmai Cave এ যাওয়া যাবে না, পানি দিয়ে ভর্তি থাকবে। এটি ইংরেজী U আকৃতির, ১৫০ মিটার লম্বায়, পুরোপুরি প্রাকৃতিকভাবে তৈরী, প্রবেশ মূল্য ২০ রুপি। তবে যাদের শ্বাসকষ্ট, হাঁটুতে ব্যথা, আঁধারে ভয় আছে তাদের এখানে প্রবেশ না করাই ভালো। Nohkalikai Falls উচ্চতার দিক দিয়ে এশিয়ায় ৪র্থ। উচ্চতা ১১১৫ ফুট। Nohkalikai Falls এর কাছেই খাবারের ব্যবস্থা আছে। ভাত-সবজি-ডাল-মাছ-মাংস সবই পাবেন (৮০ রুপি করে)। প্রত্যেকটা জায়গায়ই অসম্ভব সুন্দর, চোখে না দেখলে শুধু লিখে বোঝানো যাবে না। সব দেখা শেষ করে সন্ধ্যায় পুলিশ বাজার এশে নাস্তা করে শেষ বারের মত ঘুরে নিলাম বাজারটা, কাল যে ফিরতে হবে।
পরদিন সকালে ভোর ভোর বের হয়ে পড়লাম দেশের উদ্দেশ্যে। ৯টার মধ্যে তামাবিলে এসে সব কাজ শেষ করে দেশের মাটিতে পা রাখলাম। স্মৃতিতে নিয়ে এলাম পাহাড় আর মেঘের মিলনস্থল শিলংকে। ঘরের কাছেই এত সুন্দর একটি রাজ্য ভাবতেই অবাক লাগছে, রাস্তা দিয়ে বাসার পথে ফিরছি আর পাহাড়গুলো দেখে ভাবছি পাহাড়ের ওপারের মানুষের কথা।
এক নজরে দেখে নেই পুরো খরচের বিবরণ
আগেই বলে নেই গ্রুপ এ গেলে খুব সুবিধা, ৩ জন, ৬ জন এমন হলে ভালো। ট্যাক্সি একজনের জন্য যে ভাড়া, ৩ জনেও একই। ট্যাক্সিতে ৩ জন আরামে বসা যায় (সামনে ১ জন, পিছনে ২ জন), পাহাড়ি রাস্তা তাই পিছনে ৩ জনে একটু কষ্ট। আর গ্রুপ এ গেলে মজা বেশি হয়।
সিলেট থেকে তামাবিল: বন্দর পয়েন্ট থেকে ৪০০-৬০০/- (সি এন জি) (লোকাল বাসও আছে সোবহানীঘাট থেকে)
তামাবিল থেকে ডাউকি বাজার লোকাল ট্যাক্সি: জনপ্রতি ১০-২০ রুপি
ডাউকি বাজার থেকে শিলং এর পুলিশ বাজার পয়েন্ট ট্যাক্সি: ২০০০ রুপি (living root bridge এবং Mawlynnong village দেখে যাওয়া সহ)
হোটেল খরচ: ১২০০-২১০০ রুপি (খাবার ছাড়া), বাইরে খাওয়াই ভালো।
২য় দিন: লোকাল ট্যুরিস্ট স্পট
ট্যাক্সি ভাড়া: ১২০০-১৬০০ রুপি (বারাপানিলেক/উমিয়ামলেক, ডনভস্কো মিউজিয়াম, এলিফেন্ট ফলস, গলফ লিংক, চার্চ, লেডিহায়দারি পার্ক, ওয়ার্ডসলেক)
৩য় দিন: চেরাপুঞ্জি
জায়গাগুলো দেখতে গেলে মেঘালয় ট্যুরিস্ট এর সাথে যাওয়াই ভালো, সব দেখা যায়, খরচও কম হয়, নিরাপদ। আগের দিন বুকিং দিতে হয়। ফোন করেও বুকিং দেয়া যায়।
ভাড়া জন প্রতি ৩৫০ রুপি।
ট্যাক্সি নিয়ে গেলে ১৮০০ রুপি।
স্থানগুলো- মাওডাকভ্যালী (MawkdokValley), সেভেন সিস্টারস ফলস, মৌসমী কেভ (Mawsmai Cave), নহকালিকাই (Nohkalikai Falls), বোটানিক্যাল গার্ডেন, রাম কৃষ্ণ মিশন।
৪র্থ দিন:
পুলিশ বাজার থেকে তামাবিল: ১৩০০-১৫০০ রুপি (সংপেডং আর কারেন্সুই দেখে আসলে ২০০০-২২০০)
খাবার: সুরুচি নামে একটি হোটেল আছে, বাঙালী সব ধরনের খাবার পাওয়া যায়। অবশ্যই সন্ধ্যার স্ট্রিট ফুড খেতে ভুলবেন না। অনেক মজার।
৫০-১১০ রুপি (ভাত, ডাল, সবজি, রুইমাছ/মুরগী)
সকালের নাস্তাও রাস্তার পাশ থেকে।
বিঃদ্রঃ যে হোটেলেই উঠুন আগে থেকে কথা বলে সব ঠিক করে নেবেন। wi-fi, পানি, স্যান্ডেল এসব ভাড়ার সাথে কিনা, অনেক হোটেল এগুলোর আলাদা চার্জ রাখে।