উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত যাচ্ছেন ক্রিকেটার চামেলী
প্রকাশ | ২২ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৫১
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার চামেলী খাতুন উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামী সপ্তাহে ভারতের বেঙ্গালুরুতে যাচ্ছেন।
খবরটি নিশ্চিত করে পঙ্গু হাসপাতালে চামেলীর সঙ্গে থাকা তার বড় বোনের মেয়ে মুশফিকা রোজী জানান, ঢাকায় আনার পর চামেলীর প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। দেশেই চামেলীর চিকিৎসা সম্ভব। এরপরও আবার মাঠে খেলার জন্য উপযুক্ত হতে ভারতে যেতে চান চামেলী।
মুশফিকা রোজী বলেন, এরইমধ্যে তার ও চামেলীর পাসপোর্ট এবং ভিসা তৈরি হয়ে গেছে। সাথে যাবেন চামেলীর আরেক ভাগ্নে রায়হান। তার ভিসা হয়ে গেলে দ্রুতই বেঙ্গালুরুর উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন চামেলী।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তত্ত্বাবধানে বর্তমানে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) দ্বিতীয় তলায় ২১৬ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ক্রিকেটার চামেলী খাতুন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার গত ২ নভেম্বর রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) এসএম আব্দুল কাদের জানান, গত ৩১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল কর্মকর্তা খুরশীদুল আলম জানিয়েছেন খেলোয়াড় অসুস্থ চামেলীর চিকিৎসার দায়িত্ব বহন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য তাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এরপরই শুক্রবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহীর দরগাপাড়া এলাকার বাসা থেকে বিমানবন্দরে নেওয়া হয় চামেলীকে। পরে নভোএয়ারের একটি ফ্লাইটে করে ঢাকায় এসেছেন চামেলী। এরই মধ্যে চামেলীর শারীরিক অবস্থার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এর আগে চামেলীকে দেখতে যান রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি চামেলীর উন্নত চিকিৎসার জন্য নগদ এক লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেন। এছাড়া চামেলীর চিকিৎসার জন্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও জাতীয় ক্রিকেট দলের দলের আরেক সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান।
সাকিব, মোস্তাফিজের পর সাবেক ক্রিকেটার অসুস্থ চামেলী খাতুনের চিকিৎসার সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, বিসিবি পরিচালক ও কোয়াব (ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সভাপতি নাইমুর রহমান দুর্জয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত চামেলী খাতুন দাপটের সঙ্গে নিজের নৈপূণ্যতা দেখিয়েছেন জাতীয় পর্যায়ের অ্যাথলেটিক্স, ফুটবল এবং প্রমীলা ক্রিকেটে। আট বছর থেকে লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়াসহ মেরুদণ্ডের হাড়ের ব্যথা নিয়ে বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় পৌঁছেছেন চামেলী খাতুন। মেরুদণ্ডের দুই হাড়ের ফাঁকে থাকা নরম ডিস্কগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অবশ হয়ে যাচ্ছে তার পুরো ডান পাশ। এই অবস্থায় দ্রুত দেশের বাইরে সার্জারির পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। চামেলী চাকরি করেন আনসার ভিডিপি অফিসে। অসুস্থতার কারণে সেই চাকরিও যায় যায় অবস্থা।
তাই নিজের চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। চামেলীর দুদর্শার চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসলে তা নজরে আসে সবার। তাকে সাহায্য করতে হাত বাড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেটারসহ সমাজের বিত্তবানেরা।