ফাইনালে মেজাজ হারালেন সেরেনা, বিতর্কের ঝড়
প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:১২ | আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:২৮
ইউএস ওপেনের নারী এককের ফাইনালে মেজাজ হারিয়ে আম্পায়ারকে ধুয়ে দিলেন টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামস।
৮ সেপ্টেম্বর (শনিবার) রাতে ফাইনালে মুখোমুখি হন যুক্তরাষ্ট্রের সেরেনা উইলিয়ামস ও জাপানের নাওমি ওসাকা।
ঘটনার সূত্রপাত দ্বিতীয় সেটের দ্বিতীয় গেমের সময়। ওসাকা প্রথম সেট জিতে নেন ৬-২ ব্যবধানে। তারপর দেখা যায় প্লেয়ার বক্স থেকে সেরেনাকে কিছু ইঙ্গিত করছেন তার কোচ প্যাট্রিক। যে কারণে মার্কিন তারকাকে সতর্ক করেন চেয়ার আম্পায়ার কার্লোস ব়্যামোস। আর এতেই মেজাজ হারান সেরেনা। আম্পায়ারকে চিৎকার করে বলতে থাকেন, তিনি কোর্টে দাঁড়িয়ে কোচের থেকে কোনো পরামর্শ নেননি। ক্যারিয়রে কখনো প্রতারণা করেননি তিনি।
দ্বিতীয় সেটের গেম চলাকালীন পিছিয়ে পড়ে সজোরে ব়্যাকেট ছুঁড়ে ফেলতেও দেখা যায় ২৩ টি গ্র্যান্ড স্লামের অধিকারীকে। পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়। এরপর ডকেট পয়েন্ট কেটে নেয়ায় ব়্যামোসকে ক্ষমা চাইতে বলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। আর তখনই চেয়ার আম্পায়ারকে ‘মিথ্যেবাদী’, ‘চোর’ অপবাদ দিয়ে চিৎকার করে ওঠেন সেরেনা। তিনি বলেন, আপনি মিথ্যাবাদী। আমি বেঁচে থাকতে আমার কোর্টে আর কখনো আপনাকে দেখা যাবে না।
এমন ঘটনায় সেরেনার বিরুদ্ধে ‘মৌখিকভাবে অপমান’-এর অভিযোগ তোলেন চেয়ার আম্পায়ার ব়্যামোস। চেয়ার আম্পায়ার পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিলে খেলায় আরও এগিয়ে যান ওসাকা। ক্ষুব্ধ সেরেনা এরপর টুর্নামেন্টের রেফারিকে নিজের অভিযোগ জানান।
বারবার বলতে থাকেন, তিনি কোনো ভুল করেননি। কোনো নিয়মভঙ্গ করেননি। উল্টো তার অভিযোগ, দ্বিচারিতা করেছেন চেয়ার আম্পায়ারই। তাকে অপমানও করা হয়েছে।
এদিকে, বিষয়টিকে ‘পরামর্শ’ বলছেন ইউএস ওপেন কর্তৃপক্ষ। ডব্লিউটিএ ইভেন্টে বিষয়টি বৈধ হলেও গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টে বিষয়টি অবৈধ। কোচ এবং খেলোয়াড়কে নিষিদ্ধ করার ক্ষমতাও রাখেন আম্পায়ার।
এদিকে, কোর্টে দাঁড়িয়ে চেয়ার আম্পায়ারের প্রতি সেরেনার এমন আচরণ নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। যিনি খেতাবজয়ী ওসাকার আদর্শ, তিনিই কিনা ফাইনালে মেজাজ হারালেন!
সেরেনা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, আমি কখনও প্রতারণা করিনি। আমি অন-কোর্ট কোচিং নিইনি। জেতার জন্য কখনো মিথ্যের আশ্রয় অবলম্বন করিনি। তার চেয়ে ভালো আমি হেরে যাব।
সেরেনার কোচ স্বীকার করেছেন যে, তিনি সেরেনাকে নির্দেশ দিচ্ছিলেন। এটা সব কোচই করে থাকে বলে তার মত। যদিও বিষয়টি ডব্লিউটিএ ট্যুরে আইনত। কিন্তু গ্র্যান্ড স্লামে এটি নিষিদ্ধ।
সেরেনা লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ এনে বলেন যে, আমি এটা দেখেছি যে, ছেলেরা আম্পায়ারকে অনেক কিছু বলে। কিন্তু কখনও তাদের থেকে ম্যাচ কেড়ে নেয়া হয় না। আমি মেয়েদের অধিকার ও সাম্যবাদের লড়াই করি। সেটা চলতে থাকবে। অন্যদিকে সেরেনার কোচ প্যাট্রিক টুইট করে র্যামোসকে বিঁধেছেন। ম্যাচে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ এনেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী সেরেনা ২০১৪ সালে সবশেষ ইউএস ওপেন জিতেছিলেন। এর আগে ১৯৯৯, ২০০২, ২০১২ এবং ২০১৩ সালে এ শিরোপা জিতেছিলেন এই মার্কিন তারকা।