বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সাতটি তথ্য
প্রকাশ | ১১ মে ২০১৮, ১২:৫৭
শেষ মুহূর্তে এসে কারিগরি জটিলতায় সম্ভব হয়নি বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ। তবে এই উৎক্ষেপণ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
বাংলাদেশ সময় ১০ মে (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত ৩টা ৪৭ মিনিটে স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে করে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মহাকাশে পাড়ি জমানোর কথা ছিল। কিন্তু সব প্রস্তুতি থাকার পরেও শেষ মুহূর্তে কারিগরি জটিলতার কারণে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে পাঠানো সম্ভব হয়নি। পরে সময় আরও ১৫ মিনিট সময় বাড়িয়ে ৪টা ২ মিনিটে উৎক্ষেপণের কথা বলা হয়। তবে ৪টা ৭ মিনিটে উৎক্ষেপণের স্থগিতের কথা জানায় স্পেসএক্স।
একদিন পেছালেও ১১ মে (শুক্রবার) দিবাগত রাত্রে ঠিক একই সময়ে আবার মহাকাশে উৎক্ষেপণ হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু ওয়ান স্যাটেলাইট। চলুন জেনে নেয়া যাক এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
স্যাটেলাইটের ধরণ
মহাকাশে প্রায় ৫০টি দেশের উপর দুই হাজারের বেশি স্যাটেলাইট বিদ্যমান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-আবহাওয়া স্যাটেলাইট, পর্যবেক্ষক স্যাটেলাইট, ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট ইত্যাদি। তবে বিএস-ওয়ান হল যোগাযোগ ও সম্প্রচার স্যাটেলাইট।
এর কাজ
টিভি চ্যানেলগুলোর স্যাটেলাইট সেবা নিশ্চিত করাই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রধান কাজ। এর সাহায্যে চালু করা যাবে ডিটিএইচ বা ডিরেক্ট টু হোম ডিশ সার্ভিস। এছাড়া যেসব জায়গায় অপটিক কেবল বা সাবমেরিন কেবল পৌছায় নি সেসব জায়গায় এ স্যাটেলাইটের সাহায্যে নিশ্চিত হতে পারে ইন্টারনেট সংযোগ।
স্যাটেলাইটের ফুটপ্রিন্ট
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের অবস্থান ১১৯.১ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমার কক্ষপথে। এর ফুটপ্রিন্ট বা কভারেজ হবে ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত। শক্তিশালী কেইউ ও সি ব্যান্ডের মাধ্যমে এটি সবচেয়ে ভালো কাভার করবে পুরো বাংলাদেশ, সার্কভুক্ত দেশসমূহ, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়া।
স্থায়িত্ব
১৫ বছরের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে অরবিটাল স্লট কেনা হয়েছে। তবে বিএস ওয়ানের স্থায়িত্ব হতে পারে ১৮ বছর পর্যন্ত।
স্যাটেলাইট নির্মাণ
৩.৭ টন ওজনের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটির ডিজাইন এবং তৈরি করেছে ফ্রান্সের কোম্পানি থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেস। আর যে রকেট এটাকে মহাকাশে নিয়ে যাচ্ছে সেটি বানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্স। উৎক্ষেপণ হচ্ছে ফ্লোরিডার লঞ্চপ্যাড থেকে।
বিএস-ওয়ানের খরচ
শুরুতে বাজেট ধরা হয় ২৯৬৭.৯৫ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ২৭৬৫ কোটি টাকায় এ পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হল। এর মধ্যে ১৩১৫ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার আর বাকিটা বিদেশি অর্থায়ন।
স্যাটেলাইট অপারেশন
আর্থ স্টেশন থেকে ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্যাটেলাইটটির কক্ষপথে যেতে সময় লাগবে ৮-১১ দিন। আর পুরোপুরি কাজের জন্য প্রস্তুত হবে ৩ মাসের মধ্যে। এরপর প্রথম ৩ বছর থ্যালাস অ্যালেনিয়ার সহায়তায় এটির দেখভাল করবে বাংলাদেশ। পরে পুরোপুরি বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের হাতেই গাজীপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়া আর্থ স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে এটি।