পরাধীন স্বাধীনতা
প্রকাশ | ০৫ এপ্রিল ২০১৭, ১৭:৫৮
স্বাধীনতারই কোন স্বাধীনতা নেই। বিষয়টা একটু গোলমেলে আর অদ্ভুতও বটে। আমরা সবাই স্বাধীন থাকতে চাই এমনকি একটা অবুঝ শিশুও তার নিজের জগত নিয়ে ব্যস্ত থাকার সময় বাধাগ্রস্থ হলে ভয়ানক বিরক্ত হয়। কিন্তু কান্না দিয়ে প্রকাশ করা ছাড়া তার কাছে কোন হাতিয়ার নেই। অদ্ভুত হল, ওর কাছে তবুও কান্না আছে আর আমাদের কাছে কিছুই নেই। জীবন বিপন্ন তবুও নিশ্চুপ!
এই পরাধীনতার বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে বাধ্য হয়ে হোক আর ইচ্ছে করে হোক নিশ্চুপ থাকার চাইতে ভয়াবহ কিছু হয় কি?
কথাগুলো বলার একমাত্র কারণ আমাদের দেশটা স্বাধীন হয়েছে, আমরা স্বাধীন হইনি। আমরা নিজেরা নিজেদের কাছে পরাধীন। ব্যক্তি তার পরিবারের কাছে, একটি পরিবার সমাজের কাছে আর এক একটা সমাজ রাষ্ট্রের কাছে পরাধীন।
সেটা না হলে সাঁওতালদের ঘর পুড়তো না, ঘরের বউকে শারীরিক বা মানসিকভাবে নির্যাতিত হতে হতো না, মেয়েরা কর্মক্ষেত্রে যাবে কিনা সেটা নিয়ে দশবার ভাবতে হতো না, শাজনীন, তনু, রিশা, তিশাকে 'সম্ভ্রম' হারিয়ে প্রাণ দিতে হতো না, দফায় দফায় জঙ্গি হামলায় আচমকা মরতে হতো না কাউকে।
এভাবে বলে শেষ না করার মত হাজারো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতো না যদি আমরা সত্যিই স্বাধীন হতাম।
আমাদের দেশে একটি সন্তান জন্ম দিয়েই মা আশংকায় থাকে সুষ্ঠু এবং সুস্থ পরিবেশে বড় করতে পারবে কিনা তার সন্তানকে।
সত্যি বলতে আমরা কি চাই আমরা নিজেরাই জানি না। পুরো দেশটা আজ জিম্মি হয়ে গেছে পরাধীনতার আবদ্ধ বেড়াজালে। সেটা ছিঁড়ে বের হবার কোন চেষ্টাও নেই আমাদের। কারণ আমরা ভয় পাই। নিজের মেরুদণ্ডটা সোজা করার জন্য সাহস নামক প্রতিভাটা সবার থাকে না। ব্যপারটা এমন, যা আছি যেমন আছি খারাপ কি! কিন্তু সবার ভিতরেই অদম্য কিছু একটা ব্যাপার থাকে, যেটা অনেকে উপলব্ধিই করতে পারে না, আর অনেকে জেনেও চুপ করে থাকে।
নিজেদের স্বাধীন ভেবে কৃত্রিম তৃপ্তি পেতেই অভ্যস্থ আমরা। তাই হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে চলছে আমাদের স্বাধীনতা।
লেখক: আইন শিক্ষার্থী