আপনি জঙ্গিদের শক্তি বাড়াচ্ছেন না তো?
প্রকাশ | ২৬ মার্চ ২০১৭, ১৬:১১
(১)
পঁচিশে মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। আমার আজকে ইচ্ছা ছিল এইটা নিয়ে একটা পোস্ট লিখব। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার খেলা দেখছিলাম আর ভাবছিলাম কি লিখব। সিরিয়াস ধরনের জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ তো আর লিখব না, আমি আবেগপ্রবণ মানুষ, নানারকম ঘটনা নিয়ে ব্যক্তিগত আবেগটা সকলের সাথে শেয়ার করতে চেষ্টা করি। পঁচিশে মার্চ নিয়ে আমাদের সকলেরই তীব্র আবেগ আছে। আর আমাদের দেশে অল্প কিছু মানুষের সাথে আমার নিজের ২৫শে মার্চ নিয়ে আবেগটা দুই কারণে। একটা তো আমাদের ১৯৭১ এর ২৫শে মার্চ আছে। আরেকটা হচ্ছে আমাদের পাহাড়ে ১৯৮০ সনের ২৫শে মার্চে কাউখালির কলমপতিতে গণহত্যা। ১৯৮০ সনের গণহত্যাটি ঘটিয়েছিল আমাদের নিজেদের সেনাবাহিনীই।
ভাবছিলাম গণহত্যা গণহত্যাই- সেটা পাকিস্তানীদের হাতে বাঙালি গণহত্যা, বা তুর্কিদের হাতে আর্মেনীয়দের গণহত্যা বা নাজিদের হাতে ইয়াহুদি গণহত্যা যেটাই হোক না কেন। মৃতের সংখ্যা ছোট হোক কিংবা বড় হোক, গণহত্যার হোতাদের অপরাধ কখনো তাতে কম বেশি হয় না। একই সাথে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর শোকের মাত্রাও সংখ্যার সমানুপাতে কমে না বা বাড়ে না। গণহত্যা একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং সকল গণহত্যাই আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর জন্যে শোকাবহ। এইগুলি যখন ভাবছি তখন মনে পড়ছিল ইসরাইলী কবি ইয়েহুদা এমিচাই এর কথা।
ইয়েহুদা এমিচাই (Yehuda Amichai) জার্মানি থেকে পালিয়ে এসেছিলেন হলোকাস্ট শুরু হওয়ার আগেই। হলোকাস্ট নিয়ে তিনি কয়েকটি কবিতা লিখেছেন- ইংরেজি অনুবাদ অনলাইনে খুঁজলে পাবেন- যেগুলিতে গণহত্যায় মানবিক কষ্টের কথা কলজে ছুঁয়ে যায়। ভেবছিলাম গণহত্যার এই মানবিক দিকটির সার্বজনীনতা নিয়ে বলবো- যে কষ্টের দিকটিতে বা শোকের জায়গাটিতে হলোকাস্টে স্বজন হারানো একটি ইহুদী পরিবার ও পঁচিশে মার্চে স্বজন হারানো একটি বাঙালি পরিবার আর কলমপতিতে স্বজন হারানো একটি চাকমা পরিবারের মধ্যে বিশেষ কোন ফারাক নাই।
কিন্তু সিলেটের ঘটনার পর এখন এই ইসলামী জঙ্গিবাদের ব্যাপারটা বলা বেশী জরুরী মনে হচ্ছে। বলাটা জরুরী কারণ এইসব গণহত্যা আর আজকের এই ইসলামী জঙ্গিবাদ এদের রাজনৈতিক ভিত্তি মোটামুটি একই।
(২)
গণহত্যাকে আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলি কেন? কেবল বেশী সংখ্যায় মানুষ হত্যার জন্যে? না। নিহত মানুষের সংখ্যা দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয় না। মানবতা বিরোধী অপরাধ হয় যখন হত্যাকাণ্ড বা অত্যাচারগুলি একটি বিশেষ জাতীগোষ্ঠী বা এথনিক গ্রুপ বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়। লক্ষটি যখন থাকে সেই জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করা, বা সংখ্যালঘুতে পরিণত করা বা অন্য কোনোভাবে অবদমন করা। নাজিরা হলোকাস্ট চালিয়েছে ইহুদিদের বিরুদ্ধে, পাকিস্তানীরা গণহত্যা চালিয়েছে বাঙালিদের বিরুদ্ধে। এবং, বলতেই হয়, আমাদের পাহাড়ে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সেগুলির লক্ষ্য ছিল পাহাড়ি আদিবাসীরা।
একটা জনগোষ্ঠী যখন মনে করে যে ওরা অন্যদের চেয়ে উত্তম এবং ওদের মত এবং ওদের নিয়ম এবং ওদের বিশ্বাস অনুযায়ীই অন্যদেরকে জীবন যাপন করতে হবে, শাসিত হতে হবে তখনই গণহত্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়। একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী বা জাতী গোষ্ঠী আরেকটি গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে শত্রু হিসাবে এবং তখন শক্তিশালী গোষ্ঠীটি বা সংখ্যাগুরু গোষ্ঠীটি অন্যদেরকে দমন করতে নামে। এইটাই গণহত্যার রাজনৈতিক ভিত্তি- আমার ধর্ম সকলের সেরা, সুতরাং সবাইকে আমার ধর্মের শাসন মানতে হবে, বা আমার জাতি তোমাদের চেয়ে উন্নত তোমরা পশ্চাদপদ সুতরাং তোমরা আমাদের অধীনে থাকবে। কথা না শুনলেই গায়ের জোরে মেরে ফেলব।
আমাদের এখানে যেসব জঙ্গি গোষ্ঠী আছে, ওদের কথাটা কি? ওদের কথা হচ্ছে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান, সুতরাং এইখানে ইসলামের বিধানের ভিত্তিতে দেশ চলবে, ইসলামী বিধানের সাথে মেলে না বা ইসলামী বিধানের সাথে বিরোধ হয় এমন কিছু বাংলাদেশে চলবে না। ওদের কথা হচ্ছে ইসলাম হচ্ছে একটি সম্পূর্ণ জীবন বিধান, সুতরাং জীবনের সর্বক্ষেত্রে, হোক সে রাষ্ট্রীয় ব্যাপার বা ব্যক্তিগত ব্যাপার, সবাইকে ইসলামের বিধান মানতে হবে। নইলে? নইলে বোমা মেরে গুলি করে মানতে গায়ের জোরে মানতে বাধ্য করবো।
(৩)
এটাই জঙ্গিদের কথা। ওরা আমাদের উপর বোমা মারে কারণ ওরা জানে আমরা ওদের বিধান অনুযায়ী আমাদের রাষ্ট্র বা আমাদের জীবন চালাতে চাই না। ওদের পক্ষে সংখ্যাগুরু মানুষ নেই বা এমন সংখ্যক মানুষও নেই যে ওরা সংগঠিত হয়ে প্রকাশ্যে গণহত্যা চালাতে পারে। সেটা হলে ওরাও ঠিকই গণহত্যা করতো। এখন ওরা লুকিয়ে বোমা মারছে, যখন বেশ কিছু সমর্থক হবে তখন বাহিনী বানিয়ে আমাদেরকে মারবে। আজকে এখানে সেখানে বোমা ফাটাচ্ছে। একেকটা ঘটনায় দুই চারজন করে মানুষ মরছে। যখন ওদের সমর্থক বাড়বে শক্তি বাড়বে তখন হাজার হাজার মারবে।
সেইখানেই মুল শঙ্কাটা। আপনি ওদের সমর্থক বাড়াচ্ছেন না তো? আপনি ওদের শক্তি বাড়াচ্ছেন না তো। ভেবে দেখেন।
এই ইসলামী জঙ্গিরা নাস্তিক লেখকদের উপর হামলা করেছেন। কয়েকজনকে হত্যাও করেছেন। অভিজিৎ রায়ের মতো প্রতিভাবান লেখককে মেরে ফেললো। আপনি তখন কি বলেছেন? আপনি বলেছেন ওরা এইসব লেখে কেন? ওরা লিস্ট করেছে, কাকে কাকে মারবে ওদের নাম ঘোষণা করেছে। আপনি কি করেছেন? আপনি উপদেশ দিয়েছেন তোমরা ধর্মের বিরুদ্ধে লেখালেখি বন্ধ করে দাও। আপনি কি তখন বলেছিলেন যে, না, ওদের যা ইচ্ছা তাই ওরা লেখুক, লেখার জন্যে কাউকে হত্যা করা অন্যায়? না বলেননি। এর মানে কি দাঁড়াচ্ছে?
বিদেশে যখন ইসলামী জঙ্গিরা নির্বিচারে মানুষ মেরেছে, আপনি তখন কি বলেছেন? আপনি তো মুক্তকণ্ঠে ওর প্রতিবাদ করেননি। আপনি তখন ফিলিস্তিন দেখিয়েছেন আরও কতো কি? আমরা যখন ওদেরকে মুসলিম সন্ত্রাসী বলেছি, আপনারা তখন আমাদের সাথে তর্কে লেগেছেন। না, ওরা মুসলিম না, সব মুসলমান জঙ্গি না, জঙ্গিদের কোন ধর্ম নেই। কতো কিছু।
ওরা যখন আমদের এখানে নাস্তিক, সেক্যুলার বা লিবারেলদেরকে গালাগালি করেছে আপনি তখন কি তার প্রতিবাদ করেছেন? না। করেননি। আপনি তখন আমাদেরকে নসিহত করতে এসেছেন। বলেছেন যে, দেখো এই দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান, ধর্মীয় মূল্যবোধ আমাদের সংস্কৃতির অংশ, মুসলমানদের সেন্টিমেন্ট বুঝতে হবে ইত্যাদি।
(৪)
ফলাফল কি দাঁড়িয়েছে? ফলাফল দাঁড়িয়েছে যে আমাদের বড় রাজনৈতিক দলগুলি পর্যন্ত রাজনীতিতে ধর্মকে বিক্রি করতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ বিএনপি কেউই মুখ খুলে বলছে না যে এই দেশের সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম তুলে দিতে হবে। কেউ জোর গলায় বলছেন না যে বাংলাদেশ একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র, মুসলিম রাষ্ট্র না। প্রধানমন্ত্রী তো আরেক ডিগ্রী এগিয়ে বলেছেন যে তিনি নিজেই নাকি মদিনা সনদ অনুযায়ী দেশ চালাচ্ছেন।
না, আপনি মুসলমান, ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন, ধর্ম কর্ম করবেন সে তো আপনার ইচ্ছা। কিন্তু জুমার নামাজের পর যখন উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেন ইমাম সাহেবরা তখন কি আপনি বলেছেন যে, না, ইমাম সাহেব হিন্দু খ্রিস্টান, ইহুদি ওদেরও অধিকার আছে ওদের ধর্ম পালন করার? আপনি কি কখনো বলেছেন যে এই দেশটা শুধু মুসলমানের না? আপনি কি কখনো বলেছেন যে এই দেশে যদি একজনও অমুসলিম থাকে সেও এই দেশের একজন মালিক। বলেননি। আপনিও হিন্দুদেরকে মালাউন বলেছেন।
আপনি জঙ্গিদেরকে সমর্থন করেছেন। আপনারা কাতারে কাতারে শাপলা চত্বরে গেছেন। নাস্তিক মুরতাদদের ফাঁসি দাবি করেছেন। হেফাজতকে চাঁদা দিয়েছেন। হিজবুত তাহরিরকে চাঁদা দিয়েছেন। ছেলেমেয়েদেরকে মানুষ বানানোর আগে মুসলমান বানিয়েছেন। ছয় সাত বছরের শিশু কন্যার মাথায় হিজাব চাপিয়ে দিয়েছেন। আপনারা যখন ছেলেমেয়েদেরকে উত্তম মানুষ বানানোর চেয়ে উত্তম মুসলমান বানানোর ব্যস্ত হয়েছেন, আপনাদেরই একশজন ছেলেমেয়ের মধ্যে একজন বা দুইজন তো ধর্মের র্যাডিকেল পথ গ্রহণ করবেই।
ছেলেটা পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে, খুশি হয়েছেন। বেশ কথা। কিন্তু ছেলেমেয়েদেরকে কি এই কথাটি শিখিয়েছেন যে কেউ মুসলমান না হলেই সে মন্দ হয়ে যায় না? আপনি কি আপনার শিশুকে শিখিয়েছেন যে সে ইসলাম ধর্ম পালন করলেই তার হিন্দু বন্ধুটির চেয়ে বড় হয়ে যায় না? শেখাননি। উল্টা আপনি শিখিয়েছেন যে কেবল মাত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেই আপনার পুত্র বা কন্যা একজন খ্রিস্টান বা হিন্দুর চেয়ে বড়। এদের মধ্যে একজন বা দুইজন তো জঙ্গি পন্থা বেছে নেবেই।
(৫)
হিটলার জার্মানদেরকে বলেছিল ওরা নাকি বিশুদ্ধ আর্য। জার্মান হিসেবে জন্মেছে বলেই নাকি ওরা অন্যদের তুলনায় সকলের তুলনায় শ্রেষ্ঠ। ধীরে ধীরে জার্মানদের একটা বড় অংশ এই কথাটা বিশ্বাস করেছে- হিটলারকে সমর্থন করেছে। ওরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল না প্রথমে। কিন্তু ওরা সবচেয়ে জঙ্গি ছিল। রাইখস্ট্যাগে আগুন লাগিয়ে প্রথমে ওরা হাজার হাজার কম্যুনিস্টদেরকে হত্যা করা শুরু করে। হাজার হাজার কম্যুনিস্ট মরলো- জার্মানদের বেশিরভাগই কোন প্রতিবাদ করলো না। ভেবেছে যে, ঠিক আছে কম্যুনিস্টদেরকেই তো মারছে, আমি তো কম্যুনিস্ট না, আমার অসুবিধা কি? কম্যুনিস্টদের পর কিন্তু হিটলার ওদেরকেও ঠিকই ধরেছে। এই নিয়ে একটা কবিতা তো আপনারা এই ফেইসবুকেই হয়তো দেখেছেন।
আমাদের এখানে এখনো কি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে? না। এখনো যায়নি। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে খুব একটা দেরিও নাই। এখনো সময় আছে। কোদালকে কোদাল বলতে শিখুন। যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্যে বোমা ফাটায়, ওদেরকে ইসলামী জঙ্গি বলতে লজ্জা পাবেন না। যক্ষ্মাকে যক্ষ্মা না বলে খুসখুসে কাশি বললে যক্ষ্মার চিকিৎসা হবে না।
স্পষ্ট করে বলেন, দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা চান কি চান না। যদি চান, তাহলে সেটা স্পষ্ট করে বলুন। মিনমিন করে ইনিয়ে বিনিয়ে বলবেন না যে, না, ঠিক আছে, ইসলামী মূল্যবোধের সাথে ধর্মনিরপেক্ষতার কোন বিরোধ নাই বা মদিনা সনদেই ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা আছে। এইসব বাজে কথা। রাষ্ট্রকে যখনই আপনি একটা ধর্মের বিধান অনুসরণ করতে বলবেন তখনই আপনি অন্য ধর্মের মানুষকে ছোট করে ফেললেন। আপনার ধর্মের বিধান ভালো কি মন্দ কথা সেটা না। কথা হচ্ছে রাষ্ট্র কোন একটি ধর্মের মানুষের না।
(৬)
আর যদি মিনমিন করতে থাকেন আর ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললে ভোট হারাবেন ভেবে যদি আল্লাহ্র নামে ভোট চাইতে থাকেন তাহলে ভুল করবেন। মনে রাখবেন, মানুষ আল্লাহ্র নামে বা মদিনা সনদের নামে আপনাকে ভোট দেবে না। আল্লাহ্র নামে ভোট চেয়ে আপনি রাজনীতিতে আল্লাহ্র ব্যবহারের বৈধতা দিচ্ছেন মাত্র। যারা আল্লাহ্র নামে ভোট দেবে ওরা ধর্মের চ্যাম্পিয়নকে ভোট দেবে, আপনাকে দেবে না।
আপনারা যতই রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্মের কথা বলবেন, ততোই কয়েকজন করে ছেলেমেয়ে ইসলামী জঙ্গিতে রূপান্তরিত হতে থাকবে। কিভাবে? আপনি যখনই বলবেন যে মদিনা সনদের ভিত্তিতে দেশ চালাবেন তখনই কিছু ছেলেমেয়ে আপনার কথায় প্রাথমিক বিশ্বাস আনবে। এদের মধ্যে একদল খানিকটা চিন্তা ভাবনা পড়াশুনা এইসব করবে। যারা চিন্তাভাবনা পড়াশুনা করবে এদের মধ্যে একজন বা দুইজন এই সিদ্ধান্তে আসবে যে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া দেশে মদিনা সনদ কায়েম সম্ভব না। ওরা গিয়ে জঙ্গি হবে।
আজকে সিলেটে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে আপনারা যারা আঁতকে উঠছেন, তাদের উদ্দেশ্যেই এইসব কথা বলা। দেশে যদি ইসলামী জঙ্গিদের উত্থান বন্ধ করতে চান তাহলে ছেলেমেয়েদেরকে মানবতা শিক্ষা দেন। বাচ্চাদেরকে বলেন যে নিতান্ত ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে মানুষ বড় বা ছোট হয় না- মানুষ মানুষই। হিন্দুও মানুষ, মুসলমানও মানুষ, নাস্তিকও মানুষ। ধর্ম তোমার ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ বিশ্বাস ও আচরণের বিষয়। তুমি কেবল মুসলমান হয়েছ বলেই অন্যের চেয়ে উত্তম না।
এই কথা যদি আপনি বাচ্চাদেরকে না শেখান, তাহলে সেই বাচ্চা মুসলমান হলেও হতে পারে, মানুষ যে হবে না সেটা আমি বলতে পারি। আর আপনি নিজে যদি মনে করেন যে কেবল মুসলমান হয়েছেন বলেই আপনি অন্যের চেয়ে উত্তম, তাহলে আপনি এইসব জঙ্গিদেরকেই সমর্থন করছেন।
লেখক: আইনজীবী