এদের বাসায় চুলা জ্বলবে তো?
প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০২০, ২১:৫০ | আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০, ২২:১০
আমাদের যেহেতু সপ্তাহে শুক্রবার দিনটাই সবার ছুটি বিধায় বাসায় থাকা হয়, সেহেতু সব পরিবারেই দেখা যায় এইদিনে ভালো করে খাবার তৈরি করা হয় কম-বেশি। আজ দুপুরেও তাই নানা আয়োজনে খেতে বসে ছিলাম। কিন্তু এই প্রথমবার নিজের ভালো লাগার আইটেমগুলি চোখের সামনে থাকার পরও গিলতে পারলাম না। অনেক খিদে নিয়ে খেতে বসছিলাম। কারণ সকাল থেকে সারা হপ্তার জমে থাকা কাজ সেরে অনেক খেয়ে দুপুরে একটা ঘুম দিবো ভাবনা ছিলো।
ভাত প্লেটে নিতেই মনে পরলো আজ সামনের দোকানের মালিকের কথা, চালের দাম হুট করেই প্রতি মনে নাকি কম হলেও ৩০০ টাকা বেড়েছে খাতুন গঞ্জে। সব্জির দাম যে বেড়েছে সেটা নিজে বাজার করি বলে নিজেই টের পেয়েছি। তারপর মনে হলো সবাই যে লক ডাউন করে করে চিল্লাচ্ছে, তাতে লক ডাউন হবার পর যারা দিন মজুর তাদের কি হবে? কতোগুলি মানুষ বেকার হয়ে যাবে! আমি ভাবতেও পারছিনা কি হবে নেক্সট! ভ্যান চালকেরা, রিক্সাচালকেরা, আমাদের বাসায় কাজ করা হেল্পিং হ্যান্ডরা, ফুটপাত জুড়ে ছোটোখাট ব্যবসা করা মানুষগুলি কিভাবে বাজার করে খাবে? এদের কারা সাহায্য করবে? এদের বাসায় চুলা জ্বলবে তো? অনেকেই মোটামুটি মাস খানেক বা তারো বেশি চলার মতন বাজার করে ফেলেছেন। ভালো করেছেন, বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি যারা প্রতিদিন কামাই করে বাজার করে বাসায় ফেরার পর চুলা জ্বালায় তাদের কি হবে? এই নিয়ে সরকারি ভাবনা কি? যাদের অঢেল আছে তারাও কি এদের সাহায্যের কথা কিছু ভেবেছেন?
আসলে আর ভাবতে পারছিনা। প্রচন্ড মন খারাপে বমি বমি ভাব নিয়ে খাওয়া ছেড়ে উঠে গেছি।
নিজের জীবনে ও প্রচুর ঝড়ের কবলে পড়েছি বারবার। কিন্তু আবার উঠে দাঁড়িয়ে গেছি। কিন্তু এই দুর্যোগে আর নিতে পারছিনা। অনেকেই এখনো সিরিয়াসলি নেননি। আবার কেউ কেউ খুব বেশি সিরিয়াস। সামনের মাস থেকে রোজা শুরু হবে। করোনা খুব সহজে যাবে বলে মনে হয় না। ব্যবসায়ীরা একটু ভেবে দেখবেন দয়া করে, যদি আপনাদের জমিয়ে রাখা জিনিস কেনার মতন মানুষই না বাঁচে তখন ব্যবসা করবেন কাদের সাথে?
লেখক: শিক্ষক