জাইগা উঠেন, আর ঘুমাইয়েন না
প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০১৭, ০৮:২০
কেউ একজন মাইয়াডারে জোর কইরা রেপ করছে। ওই সময় মাইয়াডার নগ্ন ছবি, ভিডিও ধারণ করছে। তা দেখাইয়া দেখাইয়া বছরের পর বছর ধইরা মায়ের সহযোগিতায় ওই মাইয়ার শরীর ভোগ কইরা গেছে একটা জানোয়ার। সেই জানোয়ারটা আর কেউ না, তারা সৎ বাবা। মানে তার মায়ের দ্বিতীয় স্বামী। সৎ হোক আর অসৎ হোক মায়ের স্বামী যেহেতু বাবাই তো। তাই না?
এই ঘটনা লইয়া বিভিন্নজন বিভিন্ন কলাম, স্ট্যাটাস লেখতাছে। প্রতিবাদ, বিচার দাবি করতাছে। কিছু কিছু অখ্যাত পোর্টাল রসাইয়া রসাইয়া গল্পো বানাইয়া নিউজ করতাছে, এলেক্সা বাড়ানের লাইগা। আমরা কিছু চুতিয়া ওইইসব গল্প পড়ার জন্য হুমড়ি খাইয়া পড়তাছি। তাদের এলেক্সাও তরতর কইরা বাড়তাছে। সাথে সাথে আমাগো লেখার ইস্যু তৈরি হইতাছে।
ধর্ষক জানোয়ারটারে মানুষ ধিক্কার দিতাছে, সাথে সাথে মাইয়াডার মারেও। মাইয়াডায় মামলা করনের কারণে আমরা খবরটা জানতে পারছি। মামলা না করলে কিচ্ছু জানতাম না। জানার কথাও না। খাড়ান, পয়েন্টটা নোট করেন ‘মামলা করার কারণে জানতে পারছি না হইলে পারতাম না’। ব্যাপরটা কী কইতে চাইছি বুঝতে পারছেন?
ব্যাপারটা হইলো এই মাইয়াডায় মামলা করার কারণে আমরা জানলাম একজন সৎ বাবা তাকে বছরের পর বছর রেপ করছে। তাইলে একবার বুইঝা দেহেন এমন আর কত ঘটনা আমাগো সমাজে হইতাছে যা আমরা জানি না, জানার কথাও না। তারপরও এমন অনেক ঘটনা আজকাইল মিডিয়ার কারণে আমরা জানতে পারতাছি।
এই তো কিছুদিন আগেও এমন এক ঘটনায় এক বাবারে আটক করছে পুলিশ। ওই বাবা কিন্তু সৎ ছিল না। জন্মদাতা ছিল। তারও আগে বিক্রমপুরের একটা ঘটনা জনকণ্ঠ পত্রিকায় পইড়া নিজেও থ খাইয়া গেছিলাম। এরও বহু আগে এক মাইয়া তার বাপের লালসার থেইকা বাঁচনের লাইগা পানিতে ঝাঁপ দিয়া মরছিল। এই ঘটনাটা টঙ্গি এলাকার। ওই হারামিটাও ছিল জন্মদাতা। সেও দিনের পর দিন তার মাইয়ারে রেপ কইরা আসছিল। মাইয়াটার মরা শরীর যখন ব্যবচ্ছেদ করে তহন জানতে পারে সে অন্তঃসত্ত্বা ছিল।
২০১৪ সালে ঢাকার খিলগাঁয়েও এমন একটা ঘটনা ঘটছিল। ওইটা আছিল সৎ বাবা। মা থাকতো বিদেশে। মাইয়াডা পড়তো ক্লাসে টু না জানি থ্রিতে। এই মাইয়াডারে রেপ কইরা মাইরা ফালাইছিল ওই হারামিডায়। এটা নিয়া আমি একটা গল্পও লিখছিলাম। যা আমার গল্পের বই ‘বাই সাইকেলে’ রাখছিলাম। এমন ঘটনার বর্ণনা দিতে গেলে রাইত ভোর হইয়া আবার রাইত হইবো কিন্তু এমন উদাহরণ দেয়া শেষ আর হইব না।
তাইলে কী এমন কইরা দেশে ধর্ষণ উৎসব চলতেই থাকবো? এর থেকে কী কুনুভাবেই প্রতিকার পাইতে আমরা পারি না? ক্যান পারমু না? অবশ্যই পারমু। সোজা কয়টা পথ অনুসরণ করলে এমন অনাচার রোধ কইরা দেওনটা সহজ ব্যাপার হইয়া যাইবো। এই পথগুলান আমাগোই অনুসরণ করতে হইবো। এইখানে রাষ্ট্রেরও কিছু দায় আছে। রাষ্ট্রকেও আগায়া আইতে হইবো। আর মানুষগুলানরেও কোমর সোজা কইরা খাড়াইতে হইবো। তাইলেই সম্ভব ধর্ষণকাণ্ড রোধ করা।
তাইলে কী করতে হইবো? ধর্ষণকাণ্ডের সর্বোচ্চ বিচার করন লাগবো। সোজা কথা কোনো হাংকি পাংকি না কইরা ধর্ষকরে ফাঁসিতে ঝুলাইতে হইবো এবং দ্রুত বিচার কাজ শেষ করন লাগবো। দ্বিতীয় কথা হইলো নগ্ন ছবি, ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ কইরা দেওনের কথা কইয়া যদি কেউ তোমার একবার ধর্ষণের পর বারবার ধর্ষণ করতে চায়, আর তুমিও যদি নগ্ন ছবি প্রকাশ পাইলে জাত যাইবো ভাইবা নিজেরে ধর্ষকের কাছে সোপর্দ কইরা দেও, তাইলে এইটা চলতেই থাকবো। এইটা না কইরা ঘুইরা দাঁড়াইতে হইবো। নগ্ন ছবি প্রকাশ পাইলে জাত যাইবো টাইপ ভাবনা মাথার থেইকা ঝাইড়া ফেলাইয়া ঘুইরা দাঁড়াইতে হইবো। ধর্ষকরে উচিত শিক্ষা দেওনের লাইগা প্রথম প্রতিবাদটা তোমার দিক থেইকাই আসতে হইবো। আর যদি তা না করতে পারো, তাইলে এই দেশ থেইকা ধর্ষণকাণ্ড রোধ করা যাইবো না।
তুমি যদি মেয়ে হও, আর সে যদি তোমার পিতাও হয়, আর সে যদি তোমারে রেপ করে আর তুমি পরিবারের সম্মানের কারণে চুপ মাইরা বইসা থাকবা! এইটা কখনো কইরো না। চিৎকার দেওন লাগবো। বাবা হোক আর বাবার বাবা হোক, মনে রাখবা ধর্ষকের পরিচয় কেবল ধর্ষক, জানোয়ার ছাড়া আর কিছু না। আর অনেক মায়েরা আছেন, মাইয়ারে বাপে রেপ করতাছে জাইনাও কিছু বলেন না। আপনাগো কইতাছি, জাত যাইবো ভাইবা চুপ কইরা না থাইকা ঘুইরা দাঁড়ান। একটা কথা মনে রাইখেন, যখন আপনের স্বামী ধর্ষক, তখন তাকে স্বামী না ভাইবা ধর্ষক জানোয়ারই ভাইবেন। ধর্ষক স্বামীর সাথে সংসার করনের চাইতে রাস্তায় নাইমা ঝি এর কাম করন অনেক ভালা।
এহনও সময় আছে জাইগা উঠেন। ঘুমাইয়েন না। আপনেরা এইভাবে ঘুমাইয়া থাকলে একদিন সব পিতাই ধর্ষক হইয়া উঠবো। একদিন সব পুরুষই ধর্ষক হইয়া উঠবো। তাই কইতাছি চোখে মুখে পানি দ্যান, চোখ থেইকা ঘুম সরান। ধর্ষণ করতে আসলেই বিচি থেতলাইয়া দ্যান। দেখবেন, হারামিগুলান ক্যামন কইরা দৌড়াইয়া পলায়। মনে রাইখেন, আপনেরা নারীরা যদি মানুষ হইয়া উঠতে না পারেন, তাহলে পুরুষগুলান সারাজীবন পুরুষই রইয়া যাইবো, মানুষ আর হইবো না। তাই আপনেরা মানুষ হইয়া উঠেন, দেখবেন পুরুষগুলানও তরতর কইরা মানুষ হইতে বাধ্য হইবো।
লেখক: ব্লগার ও কলামিস্ট