অন্যের মা, বোন হলে ধর্ষণ করা জায়েজ?
প্রকাশ | ১২ জুন ২০১৭, ১৮:৩১
আপনাকে মনে করিয়ে দিচ্ছি- ঠিক গুনে গুনে বারোদিন আগে ইফতারি খেতে ডাকার ছলে দাদার বয়সী এক ধর্ষক আরেক ধর্ষকের উৎসাহে ধর্ষণ করেছে বাচ্চা মেয়েটাকে। বাচ্চার বাবা বলেছেন- দাদুর বয়সী একজন লোক এতোটা পাশবিক হতে পারে জানা ছিল না!
জী হ্যাঁ, আমিও বিশ্বাস করতে পারতাম না, কিন্তু এখন পারি। যখন আমি বলি আমি পুরুষদের বিশ্বাস করতে পারি না, তখন একদল পুরুষ এসে বলে- হায় হায়, তুমি তোমার বাবাকে বিশ্বাস করো না? ভাইকে বিশ্বাস করোনা? সত্যি কথা হচ্ছে- ভাই এবং বাবাকে বিশ্বাস করি। কিন্তু সেটা- পুরুষ বলে না, মানুষ বলে! আপনি আমাকে মা অথবা বোন ভাবতে পারলে সম্মান করতে পারবেন, কিন্তু পাশের বাড়ির মেয়ে হলে, অচেনা মেয়ে হলে পথেঘাটে ধর্ষণ করতে পারবেন- এই যুক্তি আপনাকে কে শেখালো?
আমার ঠ্যাকা পড়েনি আপনার মা বোন হওয়ার, যে কিনা নিজের মা বোনকে নিজের মা বোন বলে ছেড়ে দিচ্ছে, কিন্তু অন্যের মা বোনকে বীরপুঙ্গব সেজে ধর্ষণ করে বেড়াচ্ছে! ওরকম একমুখো ভাই, একমুখো বাপ-দাদা আমি চাইনা। অন্যের মা, বোন ধর্ষণ করা যাদের কাছে জায়েজ, নিজের মা-বোন ধর্ষণ করাও ওনাদের কাছে জায়েজ না- এটা নিশ্চিত হচ্ছেন কি করে?
বাচ্চা মেয়েটা ভয়ে মুখ খোলেনি দশদিন। কারণ ধর্ষণের পর তাকে ধর্ষকেরা বলেছিল- মুখ খুললে, কাউকে বলে দিলে তারা গলা কেটে ফেলবে, মেরে ফেলবে। কাজেই দশদিন টানা যন্ত্রণা শেষে ইনফেকশান হয়ে যাওয়ার পর গোসল করতে নিয়ে যাওয়া মায়ের কাছে সব খুলে বলেছে। এবার কি আবারো পোশাক তত্ত্ব নিয়ে আসবেন? নাকি বলবেন- মেয়েটার উচিত ছিল ধর্ষণ উপভোগ করা?
'বিচার চেয়ে আর কী হবে? ক্ষতি যা হবার তা-তো হয়েই গেছে। আমার মেয়ের জীবনে এমনটি হবে- কখনও ভাবিনি'। শিশুটির বাবা ডমিনিক রায় এভাবেই জানিয়েছেন ক্ষোভ ও কষ্টের কথা।
মনে আছে কয়েকদিন আগে আরেকটা বাচ্চা মেয়ের ধর্ষণের বিচার না পেয়ে বাবা মেয়েকে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নীচে আত্মহত্যা করেছিলেন? এই বাবারাও কিন্তু পুরুষ, আর ধর্ষকও পুরুষ!
একারণেই আমি মানুষদের কেবল মানুষ বলি, পুরুষ বলতে ভয় হয়। পাছে সে ধর্ষক হয়! আমি ধর্ষকদের আর এইসব হতভাগা বাবাদের এক কাতারে ফেলি কি করে বলেন? আপনিই বলেন!
জান্নাতুন নাঈম প্রীতির ফেসবুক থেকে