আমরা তো নারী মানুষ তো নই!
প্রকাশ | ১৬ মে ২০১৭, ১৭:৫৬
টাকা দিয়ে বুড়ো নারীদেহ ভোগ করলে হয়ে যায় জমিদার। নারীটি তকমা পায় রক্ষিতা। ষাট বছোরের বুড়ো নাতনির বয়সী মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে নিয়ে আসলে সে হয়ে যায় বর। কম বয়সীরা বেশ্যালয়ে গেলে তাকে বলা হয় রসিক নাগর। আমাদের সমাজে বিশেষ ক্ষেত্রে পুরুষের যৌনইচ্ছা পূরণের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সেটা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতিও আছে। শুনেছি সে জন্য নাকি রেজিষ্ট্রেশন করার বিধানও আছে। এই জন্য কি শুধুমাত্র দোকান ওয়ালীই কর দিবে? যিনি ভোক্তা তাকে কেন দিতে হবে না?
সুরিখানায় যারা যায় তাদের কে তো দিতে হয়। তাহলে এখানে কেন নয়? রাষ্ট্রীয় পদ্ধতি মোতাবেক কর দিয়ে যে ব্যবসা চলে তাকে কেন নিষিদ্ধ পল্লী বলা হয়? এই উৎস থেকে আদায় করা রাজস্ব কি সরকারি কোষাগারে জমা হয় না? তবে কেন এখানে যারা অতি আনন্দঘন সময় কাটিয়ে আসেন তাদের নাম ঠিকানা নথিভুক্ত করা হবে না, ক্রেতাটি পুরুষ বলে? যেকোন হোটেলে তো নাম নথিভুক্ত না করলে রুমের চাবিই দেওয়া হয় না।
জানি এই প্রশ্নগুলো উত্থাপনের জন্য আমার অনেক বন্ধুই নাখোশ হবেন। আমাকে হয়তো তালিকা থেকে বাতিল করেও দিবেন। কিন্তু কি বলবো, দুদিন থেকে মুখপুস্তিকায় নারীবিদ্বেষী বয়ান পড়তে পড়তে আর ধৈর্যের বাঁধ টিকলো না।
বিনে পয়সাতে মেয়ে মানুষ পেয়ে গেলে বলা হয় প্রেমিকা, আর মালপানি দিতে হলেই নাম হয় মাগী।
কিন্তু বিয়েতে যে দেনমোহর দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্বিচারে ভোগের অধিকার নিয়ে নিলেন তাকে তো তা বলেন না। নাকি সেদিন পাড়া পড়শি আত্মীয় গোষ্ঠী সকলে চর্ব্য চোষ্য খেতে পেয়েছিলেন বলে? আসলে ভাই সবই হচ্ছে ভোগবাদিতা। গাড়ি, বাড়ি, শান্তি, সুখ, ক্ষমতা, উত্তরাধিকার, সব কিছুই আপনাদের একার। কপাল মাইরি, আমাদের বাপ দাদার।
আমরা তো নারী মানুষ তো নই!
আমাদেরও আছে অধিকার, এই ধরণীতে আলাদা সত্তার। হে পুরুষ তোমাকে জঠরে ধারণ করি বলেই আমি মা। তোমাকে প্রেরণা দিয়ে, মমতা দিয়ে আঁকড়ে রাখি বলেই আমি প্রেয়সী। এত ঘৃণা অন্তরে লালন করে আর ছলনা নয়, চাই ন্যায্য অধিকার। আমিও পিতার শরীরের নির্যাস। আমার জন্য কেন তবে এত প্রবঞ্চনা?
তাই নজরুলের ভাষায় বলতে চাই,
জাগো নারী জাগো, বহ্নিশিখা,
সাহা সিমন্তে, রক্ত টিকা।
জাগো নারী জাগো!!
সবার জন্য শুভকামনা।
স্বপ্না দে এর ফেসবুক থেকে