সত্যিকে মিথ্যা সাজানোর কারখানা
প্রকাশ | ০১ মে ২০১৭, ০৩:২১
"You may encounter many defeats, but you must not be defeated. In fact, it may be necessary to encounter the defeats, so you can know who you are, what you can rise from, how you can still come out of it." ~ Maya Angelou
"I love to see a young girl go out and grab the world by the lapels. Life's a bitch. You've got to go out and kick ass." —Maya Angelou
“There are two powers in the world; one is the sword and the other is the pen. There is a third power stronger than both, that of women." - Malala Yousafzai
“You must learn to be still in the midst of activity and to be vibrantly alive in repose.” – Indira Gandhi
কোথাও না কোথাও এই লেখার সাথে এই তিন জনের কিছু ছোট ছোট কথা দেওয়াটা জরুরি মনে করলাম। তিন জনের কথা দিলাম কারণ এই সমাজে মানুষ লেখার মধ্যেও ধর্ম খুঁজে বেড়ায়। তাই ভারতের তিনটি প্রধান ধর্মের মানুষকে লেখাটার মধ্যে রাখলাম। প্রথমত এই লেখার মূল কারণ হল একটা বড় (অনেকের কাছে ছোট) ঘটনা। আমরা রোজ রোজ অনেক নারী নির্যাতনের কথা গেয়ে বেড়াই, কারণ সেটা এক ধরনের ভোট ব্যাংকও তৈরি করে আবার এক ধরনের মুখোশকে সুন্দর ভাবে মুখে রাখতে সাহায্য করে। বহুরূপী হওয়ার একটা খুবই সহজ পথ। এখন কথা হলো আমরা কতটুকু সেটা ধরে রাখতে পারছি মুখোশ ছাড়া। যদি দেখতে যাই তবে আমরা শুধু একটা ব্রিজ বানিয়ে তুলেছি যার উপর থেকে চানাচুর খেয়ে দৃশ্য দেখতে থাকি।
মুসকান নামক একটি করিমগঞ্জের মেয়ের সাথে নির্যাতনের (যাহাকে শাসন এর নাম দেওয়া হয়েছে) খবর এবং ভিডিও ভাবিয়ে তুলেছে যে মানুষ কত দূর এগিয়েছে। মেয়েটার সাথে এই সব করার কারণটা হল শুধু মুসলিম একটা ছেলের সাথে ঘুরা বা প্রেম করা। তাদের ধারণা হল যে মুসলিম ছেলেটা মেয়েটার সাথে প্রেম করে তাকে ‘লাভ জিহাদ’ এর শিকার বানাতে চলছিল। এইসব দেখে প্রেম শব্দটা একটা ধর্ষণের দিকে এগিয়ে চলছে আমি মনে করছি। মেয়েটার গায়ে হাত দিয়ে তার মোবাইল খুঁজা হচ্ছিল, হাত দিয়ে মারা চলছিল, অশ্লীল ভাষায় গালাগালি এবং ফুর্তির মেজাজে তার চরিত্রকে তরোয়াল দিয়ে কাটা চলছিল। এই সব কিছুর মধ্যে মেয়েটার ভিডিও করা চলছিল যাতে তার কান্না শুনে তারা আনন্দ করতে পারে। ধর্ম কি এতটাই নিচু স্বরে কথা বলে কারণ এইসবের পিছনে যদি ধর্ম হাত তুলে নাচে, তবে এইসব ধর্মকে আমি মানি না। আমাদের দেশের আইন আছে যা কখনই একটা মেয়ের গায়ে তার অনুমতি ছাড়া হাত দেওয়ার অধিকার দেয় না আর যদি হাত দিতে হয় তবে সেটা আইনের মহিলারা দিতে পারবে (যদি মেয়েটার কোনো অপরাধ সেখানে থাকে)। আমরা ওস্তাদ হয়ে গেছি পরিবারের মানুষ না হয়ে শাস্তি দিতে কারণ সেটা করলে আমরা শক্তি দেখাতে পারি। এই ঘটনার মধ্যে ছেলেগুলো ঠিক এইটাই দেখাতে চেয়েছে ‘লাভ জিহাদের’ নাম দিয়ে। এই নোংরা কান্ড করে আসার পর এরা মিলেমিশে ভিডিও এবং খবরটাকে ‘ফেক নিউজ’ বলে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আমরা ছোট থেকে Equality - কে সব সময়ই আগে রাখি (সে ধর্ম হোক বা ধর্মের ভেতরে থাকা জাতি দিয়ে ভাগ করা হোক)। আজ যদি আমরা ধর্ম নিয়ে এইসব দেখি তবে ভেবে দেখুন তো যে জাত কতটা ওর কাজ চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার কারণেই হচ্ছে সমান অধিকার কিন্তু সেই অধিকারের জোর দেখিয়ে কোন মানুষের সম্মান নষ্ট হোক এই অধিকার গনতন্ত্র দিয়ে চলাফেরা করে না। আমরা জাতের বিভিন্ন কথা নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি কিন্তু জাত যেখান থেকে শুরু হল (ধর্ম) তার মধ্যেই আমরা টানটানভাবে এখন পর্যন্ত বাস করছি। একটু বাইরে গেলেই তোমার শাস্তি পেতে হবে (বিশেষ করে মেয়েদের)।
চুপ করে থাকবেন না চিৎকার করে নিজের শক্তি দেখাবেন এইটা আপনার ওপর। ধোঁয়ার মধ্যে যদি শান্তি খুঁজে বেড়ান তবে হাতে পাখা তৈরি রাখতে হবে। শুধু একটা কথা মনে রাখবেন যে কাল এই ঘটনার মুখোমুখি আপনিও থাকতে পারেন।
If you are neutral in situations of injustice, you have chosen the side of the oppressor. If an elephant has its foot on the tail of a mouse and you say that you are neutral, the mouse will not appreciate your neutrality - Desmond Tutu
জাগরণীয়ার ইমেইল থেকে