ওড়নাপ্রথা এবং এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ
প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০১৭, ১৭:০৭
একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশ এবং এই প্রজন্ম এই দুটোরই সব থেকে বেশি বিজ্ঞানমনস্ক হবার কথা ছিলো। এত রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি তা কোন ধর্মান্ধ রাষ্ট্রের জন্য নয়। আজকাল তো আমার বাইরে বের হলে মনে হয় সৌদি আরব বা আফগানিস্থান এসে পড়েছি। এত বোরখা এত হিজাব! সংস্কৃতিতে বৈচিত্র্য মন্ডিত বলেই পাশ্চাত্য এবং অন্যান্য রাষ্ট্রে বাংলাদেশ বিশেষভাবে সমাদৃত। অথচ এ দেশে এত বড় বড় কয়েকটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে যাবার পরেও জামায়াত নিষিদ্ধ হয়নি।
'দেশটা সবার' আমার কাছে এই কথাটা যুগের সবচেয়ে বড় মিথ্যা এবং বানোয়াট কথা বলে মনে হয়। তাই যদি হবে তাহলে ভিন্নমত পোষণ করলেই তার কল্লাটা কেন চাপাতির নিচে যাবে? কেন সংখ্যালঘু বলে কিছু থাকবে? পূজার সময় বা কোন উৎসবে কেন এক শ্রেনীর তাণ্ডবে সাধারন জনগোষ্ঠী কোনঠাসা হয়ে পড়ে। সাঁওতালদের জমি জায়গা পুড়িয়ে তাদেরকে খোলা আকাশের নিচে দিনযাপনে বাধ্য করলেও সরকারের বিন্দুমাত্র টনক নড়েনি। আর এদেশে তো এখন নিয়ম হয়েই গেছে মাথাব্যথা হলে ওষুধ নয় পুরো মাথাটাই কেটে ফেলো। যেরকমটা হলি আর্টিজানের ঘটনায় আমরা লক্ষ্য করেছি।
এত কিছুর পর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে যে বই তুলে দেওয়া হচ্ছে তাতে ও-তে ওড়না। আমি বিন্দুমাত্র অবাক হয়নি। এত এত ঘটনাপ্রবাহ এরকম কিছুতেই কার্যকারণ ঘটাতে হবে এটাই স্বাভাবিক। ডিজিটাল বাংলাদেশ ওড়নাতে ঢেকে যাক! আশা নিরাশার অনেক ঊর্ধ্বে এখন আমরা। ছোট ছোট বাচ্চারা তারা কি আশা কি স্বপ্ন নিয়ে স্কুলে যায়, অথচ তারা এই পবিত্র জায়গা থেকে শিখে আসবে ওড়না শুধুমাত্র এক বিশেষ শ্রেনীর আবরণ এবং একটা সময় নারী দেহের বাড়তি অংশটুকু ঢাকতে এটার বিকল্প নেই। বিভেদ, রাজনৈতিক স্লোগানে পরিপূর্ণ আমাদের পাঠ্যবই। তাহলে এদেশে স্কলারদের কাজ কোথায়? এমন কোন মহামতি কি এদেশে ছিলো না বা নেই যার দুটো কথা বইয়ের পিছনে লিখে বাচ্চাদের শেখানো যায় "আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি"।
ফারজানা সিরাজ এর ফেসবুক থেকে