চাই না নারীরা আন্দোলন করুক
প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০১৬, ১৪:০৮
রাস্তায় চলতে ফিরতে অনেক সময়ই শাহবাগ, প্রেসক্লাবের সামনে দেখি কিছু নারী অধিকারের জন্য, নারী নিপীড়ন বন্ধের দাবীতে প্রতিবাদ সভা করছে। মাঝে মাঝে আমিও বাধ্য হয়ে শামিল হই তাদের প্রতিবাদ সভায়। খুব অনিচ্ছায় সামিল হই। কেননা আমি নারী অধিকার বা নারীবাদী আন্দোলনের ঘোর বিরোধী।
আমি চাইনা কোন নারী তার অধিকারের জন্য দিনের পর দিন রাস্তায় আন্দোলন করুক, কেননা মানুষের জীবনটা খুবই সংক্ষিপ্ত। এই সংক্ষিপ্ত জীবন কেউ আনন্দ উপভোগের পরিবর্তে আন্দোলনের মতো একটা অপ্রয়োজনীয় কাজে অপচয় করুক সেটা আমি চাইনা।
আমি চাই এই আন্দোলনের সময়টা একজন নারী বরং তার পরিবারের সাথে আড্ডা দিক, এই সাপ্তাহিক বন্ধের দিনটা সে আর তার স্বামী দুজনে মিলে বাচ্চাদের জন্য বাসায় পিৎজা বা বার্গার বানাক, সেই পিৎজা হয়তো পিৎজা হাটের পিৎজার মতো সুস্বাদু হবেনা, তবুও বানাক । এই সময়টা সে স্কাই ডাভিং শিখুক, সে এক অন্যরকম আনন্দ। এই সময়টা সে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মাতুক, কফির মগ বারবার খালি হয়ে যাক। এই সময়টা একজন নারী পাবলিক লাইব্রেরীতে মাহিদুল ইসলাম বা শিমুল মুস্তফার কবিতা শুনুক। এই সময়টা একজন নারী হলে গিয়ে দেখে আসুক একটা সিনেমা। এই সময়টা সে পার্কে একা একা হাঁটুক কিছুক্ষণ, যদি পার্কের উদাসী বাতাস তাকে উস্কানি দেয় তবে সে লিখে ফেলুক তার ফেলে আসা প্রেমের কবিতা। সে এই সময়ে আরেকবার পড়ে ফেলতে পারে রক্তকরবী। এই সময়টা সে তার সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাক।
এই সময়টা সে অনেক কিছু করতে পারে, আর কোন কাজ খুঁজে না পেলে সিডি প্লেয়ারে মৃদু আওয়াজে রবীন্দ্র সংগীত ছেড়ে বারান্দার রিভলভিং চেয়ারটায় বসে দুলুক কিছুক্ষণ।
কিন্তু আমি জানি তারা এসব কিছু করবে না। আমি যে কারণে বাধ্য হয়ে নারী নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনে শামিল হই, সেই একই বাধ্যবাধকতায় তারাও রোদে পুড়ে শামিল হবে এসব অশ্লীল (এটা ঠিক ওই অর্থে বলিনি) আন্দোলনে।
অথচ পুরুষগুলো যদি মানুষ হতো, মানবিক হতো, তবে কাঙ্ক্ষিত সময়গুলো আসতো। নারীরা জীবনটাকে যাপন করার পরিবর্তে জীবন উদযাপন করতে পারতো। আর সেদিন নিশ্চয়ই নারীরা তাদের আনন্দযজ্ঞে সম্মানিত সহযাত্রী ও বন্ধু হিসেবে আমাদেরকেও নিমন্ত্রণ করতো আনন্দিত চিত্তে।
শাহাদাত রাসএল এর ফেসবুক থেকে