তাতেই আপনাদের কলজে কেঁপে গেল?
প্রকাশ | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৭:১১
অগণতান্ত্রিক আচরণ, স্বৈরাচার, অসহিষ্ণুতা এইসব শব্দ তো আপনারা সকলেই জানেনই আরকি। জানেন না? অর্থ জানেন? সেও জানার কথা। একটা উদাহরণ দিতে পারবেন? হিটলারের উদাহরণ দিতে পারেন। ১৯৩৩ সনের ফেব্রুয়ারির শেষ দিনে রাইখস্টাগে আগুন লাগে। এর পরের দিন থেকে শুরু হয় কম্যুনিস্টদের উপর অত্যাচার। বুড়া হিন্ডেনবার্গের হাত থেকে পাকাপাকি ক্ষমতা নিয়ে হিটলার কি শুরু করেছিল সেই উদাহরণ দিতে পারেন। আভাসে ইঙ্গিতে আচরণে বিরোধিতা করলে তো কথাই নাই। মনে মনেও কেউ যদি হিটলারের বিরোধিতা করেছে তো তার উপর নেমে এসেছে অত্যাচার।
স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, অসহিষ্ণুতা এইসবকিছুর চূড়ান্ত উদাহরণ হিসাবে সবসময়ই হিটলারের উদাহরণ দেওয়া হয়। হিটলারের চেয়ে খারাপ কেউ কি কখনো হতে পারবে? আগে মনে করতাম হিটলারের তুলনা হয়না। এই প্রশ্নে আজাকাল ঈমান দুর্বল হয়ে আসছে।
হিটলার আর ওঁর দলদাসরা ওদের ফ্যাসিবাদী আচরণ জাস্টিফাই করার জন্যে কি বলতো জানেন? উন্নয়ন। প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত জার্মানির উন্নয়নের জন্যে হিটলারের বিকল্প নাই। দুইটা কথাই কিন্তু একরকম সত্যি ছিল। হিটলার সেসময়ে জার্মানিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ছিলেন এবং জার্মানিকে আসলেই তিনি একটি ব্যার্থ অকার্যকর দেউলিয়া রাষ্ট্র থেকে তুলে, একদম তলানি থেকে জার্মানিকে তুলে সারা একটি শক্তিশালী অর্থনীতিতে পরিণত করেছিলেন। কারিগরি দিক দিয়ে বা প্রযুক্তির দিক দিয়ে বা সামরিক দিক দিয়ে যেভাবেই বলেন হিটলারের জার্মানি ছিল সেসময় ইর্ষনীয় সাফল্যের শীর্ষে।
এই যে আজকে সাইকেলওয়ালাদের শোভাযাত্রার উপর ছাত্রলীগ আর পুলিশ একসাথে হামলা করেছে সেটা দেখে নানারকম কথা মনে হচ্ছে। আমার আওয়ামীপন্থী বন্ধুদের নানারকম কথা শুনি। দলদাস বললে উনারা আবার গোসা করেন, বললাম না। উনারা বলেন- উন্নয়ন চলছে, বিরক্ত করবেন না। উনারা বলেন- বিকল্প কই? উনারা বলেন- নেত্রীর চেয়ে দেশকে আপনি বেশী ভালবাসেন? উনারা প্রশ্ন করেন- নেত্রীর চেয়ে আপনি বেশী জানেন? আমি তো কোন জবাব দিতে পারি না। ফ্যালফ্যাল করে উনাদের কথা শুনি।
ফ্যালফ্যাল করে উনাদের কথা তো শুনি। কিন্তু ইতিহাসে যে এইরকম কথা আগেও শুনেছি সেগুলি মনে পরে যায়। হিটলারের কথা আইয়ুব খানের কথা। কি করবো, ইতিহাসের শিক্ষা, না চাইলেও মনে পরে যায়।
কয়জন ছিল সাইকেল শোভাযাত্রার দলে? তিনশ? চারশ? পাঁচশ? ছয়শ? ধরেন পাঁচশ। এই পাঁচশ ছেলেমেয়ের ভয়ে নখ আর দাঁত বের করে ফেললেন? এই চার পাঁচশ ছেলেমেয়ে সাইকেল চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার চারপাশ দিয়ে একটা চক্কর দিয়ে প্রেসক্লাবে যাবে তাতেই আপনাদের কলজে কেঁপে গেল? বাহ। এইভাবে চালাতে চান, চালান। এইরকম আচরণ যারা করেন ওদের জন্যে ইতিহাসে যে জায়গাটা নির্ধারিত আছে সেটা খুব বেশী সম্মানের জায়গা না। জানেন তো নিশ্চয়ই।
ইমতিয়াজ মাহমুদ এর ফেসবুক থেকে